#দিঘা: হোটেল সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বস্তি দখলের চেষ্টার অভিযোগ ঘিরে দিঘায় ধুন্ধুমার কাণ্ড৷ বিদ্যুৎ, পানীয় জল বন্ধ করে দিয়ে বস্তিবাসীদের হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে দিঘার এক হোটেল ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ পেয়ে হোটেল মালিক অরবিন্দ দে ও তাঁর ছেলে ডেনিয়েল দে-কে ধরে নিয়ে এসে আটক করে দিঘা থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন-আপনি কেমন মনের মানুষ, এই ছবিতেই লুকিয়ে রয়েছে তার রহস্য!
সমুদ্রের একেবারে গায়েই হোটেল। কিন্তু হোটেলের সামনে বস্তি থাকায় ব্যবসার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে এই জিগির তুলেই হোটেল সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেন ওই হোটেল মালিক। সেই জন্য সামনের বস্তির জায়গাটির মালিকানা দাবি করে জমির দখল নিতে চান তিনি। কিন্তু স্থানীয় বস্তিবাসীদের প্রতিরোধের কারণে এখনও পর্যন্ত তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। অভিযোগ, তারপর থেকেই ঘুরপথে হোটেল মালিকেরা বিভিন্নভাবে বস্তিবাসীদের হেনস্থা করছেন। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে, পানীয় জল সরবারহ বন্ধ করে বস্তিবাসীরদে সমস্যায় ফেলছেন অভিযুক্ত হোটেল মালিক। বস্তি মালিকানার বৈধ কোনও কাগজপত্র ছাড়াই শুধুমাত্র জনৈক আইনজীবীর একটি আইনি নোটিসকে পুঁজি করে এদিনও হোটেল মালিক অরবিন্দ দে দাবি করেছেন, তিনিই বস্তির মালিক। টাকা দিয়ে বস্তি কিনে নিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন-রাজ্যের এই জেলাগুলিতে আজ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, জেনে নিন আবহাওয়ার আপডেট
হোটেল মালিকের অমানবিক আচরণের হাত থেকে রেহাই চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন ওল্ড দিঘার সৈকত সরণী লাগোয়া পশ্চিম গদাধরপুর এলাকার বস্তির বাসিন্দারা। দিঘার বস্তি এলাকায় এ নিয়ে উত্তেজনাও ছড়িয়েছে। অভিযোগ পেয়ে হোটেল মালিক অরবিন্দ দে ও তাঁর ছেলে ডেনিয়েল দে-কে ধরে নিয়ে এসে থানায় আটক করে দিঘা থানার পুলিশ।
সূত্রের খবর, ৪০-টি পরিবারের ৩০০ মানুষের বসবাস পশ্চিম গদাধরপুর বস্তিতে। ৫০- ৬০ বছর কিংবা তারও বেশি সময় ধরে তাঁরা রয়েছেন এই জায়গায়। স্থানীয় বাসিন্দা শেখ সিরাজুল, লক্ষ্মণচরণ দাস, মালা দাস, হাসিনা বিবিরা জানান, পুরুষের পর পুরুষ এখানে বসবাস করছি। এতদিন কিছু ছিল না। মাস দেড়েক ধরে নিজেকে বস্তির মালিক বলে দাবি করছেন ওই হোটেল মালিক। আমাদের বস্তি ছেড়ে দিতে বলা হচ্ছে। আমরা প্রতিরোধ করছি বলেই আমাদের নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে।
ঘটনা নিয়ে রামনগর ব্লক প্রশাসন জানিয়েছেন, হোটেল মালিকের অন্যায় আচরণ কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবেনা। বস্তির মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্ত হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন ব্লক আধিকারিকরা।
বস্তির পরিবারগুলির পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন রামনগর এক পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি নিতাইচরণ সার। তিনি জানান, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া, পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা সমর্থনযোগ্য নয়। খুবই জঘন্যতম অপরাধ। বস্তির মানুষ পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন, সুবিচার পাবেন।
এদিকে হোটেল সম্প্রসারণের জন্য উপকূল বিধি না মানারও অভিযোগ উঠেছে হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, সমুদ্র থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে অবস্থানের জন্য বস্তি ও সংলগ্ন এলাকায় বহুতল নির্মাণ কিংবা হোটেল সম্প্রসারণের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে প্রশাসনের। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রশাসক মানসকুমার মণ্ডল জানান, ওই জায়গায় কোনও ধরণের নির্মাণ কাজ করতে দেওয়া হবে না। হোটেল সম্প্রসারণের কাজ হয়ে থাকলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Digha, Digha News