হুগলি: মেলার মধ্যে খেলা করতে গিয়ে নাগরদোলা থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত দশম শ্রেণীর ছাত্র মলয় মিত্র। বছর ১৬-র ওই নাবালক কলকাতার চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। পেটের ভিতরে ইন্টারনাল হেমারেজ, ঘাড়ে মাথায় গুরুতর ভাবে চোট পায়। কোন্নগর হাই স্কুলের পড়ুয়ার দুর্ঘটনায় দুশ্চিন্তায় পরিবার।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার বিকেলে পাড়ার কিছু বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে বিকেল বেলায় মেলার মাঠে খেলা করছিল তারা। খেলতে খেলতে মেলার মধ্যে থাকা ইলেকট্রিক নাগরদোলার উপর উঠে পড়ে। নিজেরাই হাত দিয়ে ঘোরাতে ঘোড়াতে নাগরদোলার অনেক উঁচুতে পৌঁছে যায়। আর তখনই ঘটে বিপত্তি। নাগরদোলা যখন একেবারে উপরে সেই সময় সেখান থেকে পড়ে যায় মলয়। বাকি বাচ্চারা ঘটনায় ভয় পেয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি চলে যায়।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিকে কমল পাশের হার, এ বছর পাশ ৮৬.১৫ শতাংশ পড়ুয়া
এমনকী দীর্ঘক্ষণ ধরে অজ্ঞান অবস্থায় মলয় ওই জায়গায় পড়ে থাকার পরেও মেলার কর্তৃপক্ষ কেউ এগিয়ে আসেনি তাকে সাহায্য করার জন্য। এমনটা অভিযোগ করছে আহত নাবালকের পরিবারের সদস্যরা। এরপর মলয়ের জ্ঞান ফিরলে নিজেই বাড়িতে ফিরে আসে। মলয় বাড়ি ফিরে এলে ভয়ে প্রথমে তার বাড়ির লোককে কিছু বলতে চায়নি। সে বলে তার সাইকেলে অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে। সেই মতো পরিবারের লোক ডাক্তার দেখিয়ে নিয়ে আসলেও রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। তৎক্ষণাৎ পরিবারের লোকজন মলয়কে ভর্তি করে শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশিত, দুপুর ১২টা থেকে রেজাল্ট দেখুন News18 Bangla-র ওয়েবসাইটে
সেখান থেকেও তার শরীরের অবনতি ঘটলে তাকে রেফার করা হয় কলকাতা চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে। মলয়ের বাবা গৌতম মিত্র বলেন, চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে নিয়ে আসার পর চিকিৎসকরা জানান, উঁচু জায়গা থেকে পড়ে গিয়ে তার পেটের ভেতরে ইন্টার্নাল ইনজুরি হয়েছে। পেটের মধ্যেই রক্তক্ষরণ ঘটেছে। একই সঙ্গে ঘাড়ে ও মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে। তিনি আরও বলেন চিকিৎসকরা তাদেরকে বন্ডে সই করিয়ে তার ছেলের অপারেশন করবেন বলে জানিয়েছেন।
মলয়ের মা মৌ মিত্র বলেন, একটি মেলায় যেখানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয় প্রতিদিন সেখানে একটা বাচ্চা নাগরদোলা থেকে পড়ে গেল তারপরও মেলা কর্তৃপক্ষ কোন দায়িত্ব নেই। যে সময় ঘটনাটি ঘটেছিল সেই সময় মেলাতেও অনেক মানুষ উপস্থিত ছিল। মেলার প্রাঙ্গণ থেকে কয়েক মিটারের মধ্যেই তাদের বাড়ি। মেলা কর্তৃপক্ষের কোনও লোক এগিয়ে আসেননি বাচ্চাটিকে সাহায্য করার জন্য। এমনকী তাদের কাছে জানতে গেলে তারা পুরো ঘটনার দায় এড়িয়ে যায়।
কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস বলেন, মেলা হয় পুরো ঘেরা জায়গায় সেখানে তো গিয়ে খেলার কোনও জায়গা নেই। তারপরও শুনলাম নাগরদোলায় খেলতে গিয়ে পড়ে গিয়েছে একটি ছেলে। ওর দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। ওই মেলা কমিটির সম্পাদক বিকাশ ভৌমিক তিনি বলেন, শুক্রবারই তিনি পুরো ঘটনার বিষয় জানতে পারেন। ঘটনাটি যখন ঘটেছিল তখনও মেলা চালু হয়নি। বাচ্চারা খেলাধুলো করতে করতেই এরকম দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে। ছেলেরা খেলতে এসে নাগরদোলায় উঠলে ওদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়। ছেলেরা শোনেনি। এই দুর্ঘটনার পরও ছেলেরা উঠছে।এবার সতর্ক হতে হবে।
রাহী হালদার
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Accident, Hooghly, Hooghly news