#কলকাতা: টাকা না দেওয়ায় পা ভাঙা রোগীর ট্যাকশন খুলে দিল আয়া! রোগীর যন্ত্রণা কাতর চিৎকারেও মন ভেজেনি তার। আয়ার অন্যায় আবদার না মানার এই পরিণতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। এমনই ঘটনা ঘটেছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বিষয়টি নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হওয়ায় ওই আয়াকে সাসপেন্ড করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এই ঘটনা ঘটেছে। বর্ধমানের সিজেপাড়ার বাসিন্দা সেখ আনোয়ার গাছ থেকে পড়ে গিয়ে আহত হন। তাঁর পা ভেঙে যায়। ২৪ জুন তাঁকে বর্ধমানমেডিক্যাল নিয়ে আসা হলে সেখানেই তাঁর অপারেশন হয়। অপারেশনের পর মেল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় তাঁকে। অপারেশন হওয়া বাঁ পা ট্যাকশনে ঝুলিয়ে রাখতে বলা হয়। রোগীর আত্মীয়রা বাইরে থেকে ট্যাকশন কিনে আনেন।
ওয়ার্ডের আয়া মানা মোহন্ত ওই ট্যাকশন লাগিয়ে দেন।এই কাজ করে দেওয়ার জন্য আয়া দুশো টাকা দাবি করেন। কিন্তু গরীব পরিবার টাকা দিতে অস্বীকার করে। এই নিয়ে তর্কাতর্কি চলতে থাকে। শেষে রোগীর পরিজনরা একশো টাকা দিতে রাজি হয়। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে ওই আয়া রোগীর অপারেশন হওয়া পা থেকে ওই ট্যাকশন খুলে দেয়। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে রোগী। সঙ্গে কাতর চিৎকার। তাতেও মন গলেনি তার। টেনে হিঁচড়ে ট্যাকসন খুলে দিতে থাকেন তিনি। আয়া ট্যাকসন খুলে দিলে রোগীর পরিজনরা নিজেরাই কোনওরকমে তা ফের বেঁধে দেয়।
রোগীর ভাই পরদিন ঘটনার কথা উল্লেখ করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। জানা গিয়েছে, ওই রোগী দিনমজুরি করেন।তাঁর একটি ছোট সাইকেল সারাইয়ের দোকান আছে। তাই তাঁরা সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন। হঠাৎ আয়া দুশো টাকা দাবি করায় তাঁরা সমস্যায় পড়েন। জুলুম না মানায় আয়ার কান্ড দেখে তাজ্জব তারা।
হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ হওয়ার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। রোগীর পরিজনদের কাছে একটি ভিডিও রয়েছে, যাতে দেখা যায় ওই রোগীর পা থেকে কিভাবে ট্যাকশন খুলে দিচ্ছেন ওই আয়া। শুধু ট্যাকশন খুলে দেওয়াই নয়, অভিযুক্ত আয়া রোগীর লোকজনদের সাথে দুর্ব্যবহার এবং গালিগালাজ করেন বলেও অভিযোগ।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার প্রবীর সেনগুপ্ত জানান, বিষয়টি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। অভিযুক্ত আয়াকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এমন ঘটনা আর কখনও যাতে না ঘটে তা দেখা হচ্ছে।
Saradindu Ghosh