#বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমানের এই স্কুলের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস। ইংজেরদের দেশছাড়া করার আন্দোলন তখন চরম আকার নিয়েছে। ইংরেজ শাসনমুক্ত দেশ গড়ার কাজে ব্রতী হয়েছেন অনেকেই। তাঁদেরই কয়েকজন অর্থ সংগ্রহ করে স্কুল গড়লেন। অর্থভাব থাকা সত্ত্বেও ইংরেজদের কোনও সহযোগিতা তাঁরা নিলেন না। শিক্ষকদের বেতনেরও ব্যবস্থা করলেন নিজেরাই। সেইসঙ্গে রবিবার ছুটিও বাতিল করলেন। কারণ ইংরেজদের সানডে ছুটির দিন। তাদের নিয়ম অনুসরণ হবে না এখানে। সেই রীতি চলে আসছে আজও। সবাই যখন রবিবার ছুটির মেজাজে থাকেন তখন আর পাঁচটা দিনের মতোই সমান ব্যস্ততা চলে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের গোপালপুর মুক্তকেশী বিদ্যালয়ে। এদিন শিক্ষক পড়ুয়া কাজে ব্যস্ত থাকেন সকলেই। কারণ এই স্কুলের ক্যালেন্ডারে রবিবার লাল কালির দাগ নেই। রাজ্যের বাকি সব স্কুলে রবিবার ছুটি থাকলেও ব্যতিক্রম শুধু জামালপুরের এই স্কুল। জন্ম থেকেই রবিবার কাজের দিন এই স্কুলে। ছুটি সোমবার।
গত শতাব্দীর দুইয়ের দশক। স্বাধীনতা আন্দোলনকে ঘিরে দেশ তখন উত্তাল। ইংরেজকে ভারত ছাড়া করতে জীবনকে তুচ্ছ করেছেন ভারত মায়ের দামাল ছেলেরা। বিদেশি পন্য বর্জনের ডাক উঠেছে দিকে দিকে। আগুনে পোড়ানো হচ্ছে বিদেশি পণ্য। স্বদেশী আন্দোলনে দেশ উত্তাল। গান্ধিজী অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। সেই সময় দেশ গড়ার কাজে মশগুল কিছু ব্যক্তি এলাকার ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করে তুলতে স্কুল গড়ার কাজে হাত লাগালেন। নিজেদের দান করা জমিতে এলাকার বাসিন্দাদের সহযোগিতায় গড়ে উঠলো জামালপুরের গোপালপুর মুক্তকেশী বিদ্যালয়। ১৯২২ সালের ৫ জানুয়ারি এই স্কুল প্রতিষ্ঠা হয়।ইংরেজদের রবিবার ছুটির দিন। তাই ইংরেজদের সেই নিয়মের বিরোধিতা করে সেই দিন স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হল। ছুটির দিন ঠিক হল সোমবার। প্রায় একশ বছর ধরে সেই ধারা চলে আসছে এই স্কুলে।
শিক্ষক সমীর ঘোষাল বললেন, স্বাধীনতা আন্দোলনের স্বাক্ষী এই স্কুল। এমন একটা স্কুলে শিক্ষকতার সুযোগ পেয়ে আমি গর্বিত। অন্যান্য শিক্ষকরাও রবিবার স্কুলে আসেন সানন্দেই। পড়ুয়াদের বক্তব্য, স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আমাদের স্কুলের ইতিহাস। তাই গর্বে বুক ভরে ওঠে। রবিবার স্কুল খোলা রাখার নজির অন্য কোথাও নেই।
Saradindu Ghosh
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bardhaman, Independence day