#বর্ধমান: 'তার যে এমন মাথার ব্যারাম কেউ কখনও জানতো?' এমনিতে ঠান্ডা। তবে রেগে গেলে প্রলয় নাচন দেখিয়ে ছাড়ে সে। তবে তা কদাচিৎ। সেটাই রক্ষে। বিশাল রাশভারি চেহারার জন্য কাটোয়ার বাসিন্দারা ভালোবেসে তার নাম রেখেছিলেন ‘গব্বর সিং’। শুক্রবার সকালে রুদ্র মূর্তি দেখিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল সেই ষাঁড়। গব্বর সিংয়ের হঠাৎ মৃত্যুতে মনমরা অনেকেই।
এমনিতে কোনও ঝঞ্ঝাট ছিল না এতদিন। গব্বর সিং এলাকায় ঘুরত নিজের মতো করে। বিভিন্ন বাজারে তার তোলাবাজি মেনে নিয়েছিলেন অনেকেই। গব্বর এসে দাঁড়ালেই বিনা বাক্যব্যয়ে আলু কপি মুখের সামনে ধরতেন বিক্রেতারা। রাজকীয় গাম্ভীর্যের সঙ্গে তা মুখে ঢুকিয়ে হাঁটা দিত সে। রাতে জিরিয়ে নিত রাস্তাতেই।
কিন্তু শিবরাত্রির দিন সেই গব্বরয়ের হঠাৎ তাণ্ডবে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায় কাটোয়া পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যাসাগর পল্লীতে। গব্বরের গুঁতোয় আহত হন অনেকেই। তাদের মধ্যে চারজনকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি পর্যন্ত করতে হয়। তার সামনে দিয়ে যাচ্ছিল একটি মোটর সাইকেল। গুঁতিয়ে সেই চলন্ত মোটর সাইকেল থেকে আরোহীকে ফেলে দেয় গব্বর সিং। ওই ব্যক্তির পা ভেঙে গিয়েছে।
দিন দুপুরে গব্বরের হাভলায় ত্রস্ত হয়ে ওঠেন পথ চলতি বাসিন্দারা। রাস্তায় লোক চলাচল,যানবাহনের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। অনেকে বারান্দা, ঘরের জানালা দিয়ে গব্বর সিংয়ের তান্ডব মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধরার চেষ্টাও করেন। এরপরই রাস্তায় শুয়ে পড়ে গব্বর। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।
এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল থেকেই ষাঁড়টি রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে। পথচলতি সাধারণ মানুষদের দিকে তাড়া করতে থাকে। নাগালের মধ্যে পেলেই গুঁতোতে শুরু করে। পরে অবশ্য সেই গব্বরের দাপাদাপি থেমে যায়। হঠাৎই মৃত্যু হয় গব্বর সিংয়ের।
অনেকেই বলছেন, ভেতরে ভেতরে হয়তো কোনও শারীরিক সমস্যা চলছিল। সেই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরেই অস্বাভাবিক আচরণ করছিল গব্বর। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কাটোয়ায় বিশেষ পরিচিত হয়ে উঠেছিল সে। গব্বরের মৃত্যুতে স্বাভাবিক ভাবেই মনমরা বাসিন্দারা।
Saradindu Ghosh
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।