#বর্ধমান: ধূপ। তার ব্যবহার ছাড়া পুজো অসম্পূর্ণ। আবার মৃতদেহের পাশেও জ্বালানো হয় ধূপ। শুদ্ধতা বজায় রাখতে বাজার চলতি সে সব ধূপের বদলে বিশেষ পদ্ধতিতে ঘরে তৈরি ধূপে তিনশো বছর ধরে পুজো হয়ে আসছে বর্ধমানের কাঞ্চননগরের দাস বাড়িতে। স্নান সেড়ে শুদ্ধ বসে সে সব ধূপ তৈরি করেন পরিবারের সদস্যরাই।
শ্বেত চন্দন, রক্ত চন্দন, অগুরু, লাক্ষা, মধু, হরিতকি, ধুনো সহ উনিশ রকমের উপকরণ। শুদ্ধাচারে সেইসব উপকরণ দিয়ে তৈরি হয় দাস বাড়ির ধূপ। জন্মাষ্টমীর দিন পরিবারের সদস্যরা স্নান সেড়ে শুদ্ধ বসনে ধূপ তৈরি করেন। তার আগের রাতে গঙ্গা জলে ভিজিয়ে রাখা হয় ধূপ তৈরির এইসব প্রাকৃতিক উপকরণ। সকালে সে সব শিলে বাটা হয়। এরপর পাটের মধ্যে সেইসব উপকরণ মিশিয়ে তৈরি হয় ধূপ।
রাসায়নিক বিহীন সে ধূপের গন্ধই আলাদা। এক একটি ধূপ জ্বলেও দীর্ঘক্ষন। অন্তত তিন ঘন্টা। পুজো পুজো গন্ধে ভরে ওঠে চারদিক। পুজোর প্রয়োজনের সব ধূপই তৈরি হয় জন্মাষ্টমীতে। শুদ্ধতার কথা মাথায় রেখে তিনশো বছর আগে বাড়িতেই শুরু হয়েছিল ধূপ তৈরি। আজ বাজারে হরেক রকম ধূপ অনায়াসে মিললেও দাস বাড়িতে ধূপ তৈরি প্রাচীন প্রথা হিসেবে রয়ে গিয়েছে।
বর্ধমানের কাঞ্চননগরের দাস পরিবারের আদি বাস ছিল বাঁকুড়া জেলায়। তিনশো বছর আগে সেই পরিবারের সদস্য কিনুরাম দাস বর্ধমানে এসে বসতি গড়ে দুর্গাপুজো শুরু করেন। বাড়ির উঠোনে মেলে পেতলের ছোট্ট দুর্গা মূর্তি। সেই মূর্তি প্রতিষ্ঠা পায় দাস পরিবারে। সেই সূত্র ধরেই শুরু হয় দুর্গাপুজো। প্রাচীন রীতি মেনে আজও পাদানির ওপর রাখা একুশটি পেতলের পাত্রে দেবীকে ভোগ নিবেদন করা হয়। শুরু থেকেই পশুবলি দূরে থাক, কোনও রকম বলির চল নেই এখানে। দাস বাড়িতে মায়ের স্থায়ী মন্দির রয়েছে। সেখানেই তিন শতক ধরে বংশ পরম্পরায় এই পুজো হয়ে আসছে নিষ্ঠার সঙ্গে।
Saradindu Ghosh
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Barhdaman, Dhoop, Durga Puja 2020 district-durga-puja-2020