#কাঁথি: অধিকারী গড় বলে পরিচিত কাঁথিতে দাঁড়িয়ে সরাসরি নাম করে সুর চড়িয়ে শুভেন্দুকে আক্রমণ ফিরহাদের ৷ পরিবারতন্ত্র নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণের মোক্ষম জবাব ফিরহাদ হাকিমের ৷ বলেন, ‘আমার বাবা-মা কেউ নয়, কেউ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয় ৷ সিঁড়ি ভেঙে এখানে এসেছি ৷ কিন্তু তুমি উঠেছ লিফটে ৷ শিশির অধিকারী না থাকলে কিছু না ৷ ২০০৯-এ এত অল্প বয়সে সাংসদের টিকিট পেয়েছিলে শুধু শিশির অধিকারীর ছেলে বলে ৷ আর আজ তুমি পরিবারতন্ত্রের কথা বলছ! ’ তীব্র আক্রমণ কলকাতার পুরপ্রশাসকের ৷ এখানেই শেষ নয়, যে বিজেপি পরিবারতন্ত্রের প্রসঙ্গ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে, তাকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি ফিরহাদ হাকিম ৷
শুভেন্দু তখন খাতায় কলমে জোড়াফুলেই ছিলেন, কিন্তু দূরত্ব বজায় রাখতে শুরু করেছিলেন দলের থেকে ৷ এক অরাজনৈতিক সভা থেকে তৃণমূলের নেতাদেরই কটাক্ষ করে পরিবারতন্ত্র প্রসঙ্গ তুলে বলেছিলেন, ‘আমি প্যারাস্যুটেও নামিনি ৷ লিফটেও উঠিনি ৷ সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে পরিশ্রম করে আজ এই জায়গায় এসেছি ৷’ শুভেন্দু সেই মন্তব্যকেই টার্গেট করে আক্রমণ ফিরহাদের ৷
বিজেপি যোগ দিয়েই নেত্রী ও যুব মোর্চার সভাপতি অভিষেকের উপর আক্রমণ শানিয়েছেন শুভেন্দু ৷ গেরুয়া রঙের ছোঁয়া লাগতেই পরিবারতন্ত্রের প্রসঙ্গ তুলে একাধিকবার একাধিক মন্তব্য শুভেন্দুর ৷ জবাবে এদিন ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘রাজ্যে সম্মান দিয়েছেন মমতা। এখন পরিবারতন্ত্রের কথা বলছ। ২০০৪,২০০৬,২০০৯ নমিনেশন পেয়েছিলে শিশির অধিকারীর ছেলে বলে। প্রথম দুবার ভোটে হারার পর তোমার বাবা নিজে কাঁথির আসন তোমার জন্য ছেড়ে দেন ৷ আমার আগে পিছে কেউ রাজনীতিতে নেই ৷ আমি সিঁড়ি দিয়ে উঠেছি। তুমি লিফটে উঠেছো। শিশির অধিকারী ছেলে বলে সুযোগ পেয়েছো ৷ শিশির অধিকারীর ছেলে হয়ে না জন্মালে আজ কোথায় থাকতে? ’বিশ্বাসঘাতক বলে সম্বোধন শুভেন্দুকে ৷ কাঁথির সভা থেকে আক্রমণের মাত্রা তীব্র হয় ফিরহাদের গলায় ৷ বলেন, ‘মেদিনীপুরে ক্ষমা চাইছি, কারণ এখান থেকে যে মানুষ আমাদের সাথে এতদিন ছিলেন। তিনি পাল্টি খেয়ে গেলেন। তাই ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি।ঠিক আমরা আগে কংগ্রেস করতাম। তারপর সিপিএম'কে হঠাতে টিএমসি করলাম। কিন্তু গান্ধীবাদ ভুলিনি। শুভেন্দু আমার প্রিয় ছিল। দুর্ভাগ্য তাকে নাথুরাম গডসের দলে গিয়ে তার নামে জিন্দাবাদ ধ্বনি দিচ্ছে ৷ এখন যদিও সবাই বলছেন বেঁচে গেলাম। এখন কারও প্রজা হয়ে থাকতে হবে না ৷ জেল যাবার ভয়ে, ধান্দাবাজির জন্যে নাকি উচ্চাকাঙ্ক্ষার জন্যে সে এমন করল।’
বিজেপিতে যোগ দিয়ে মঞ্চে অমিত শাহের পায়ে হাত দেওয়ার প্রসঙ্গে বলেন, ‘ আমরা আমাদের আদর্শে করি। অমিত শাহের পা যেদিন ধরল সেদিন মনে হল এই দৃশ্য দেখার চেয়ে মরে যাওয়া ভালো। তুমি বেইমানি করলে। মানুষ ঠিক বিচার করবেন ৷’
ঘরের ছেলে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে। সেই শুভেন্দুর ঘরের কাছে তৃণমূলের শক্তি প্রদর্শনী। অধিকারী গড় প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, ‘অধিকারী গড়ে তৃণমূলের মিছিল। এটা কারও গড় না। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা। বাংলা ভাল আছে। কারও কোথাও গড় নেই ৷’