#পূর্ব বর্ধমান: আমফানের বিপর্যয়কে পিছনে ফেলে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা শুরু করলেন পূর্ব বর্ধমানের কৃষকরা। মাঠ এখনও জলের তলায়। সেই জল বের করে জমি পরিষ্কার করার কাজে হাত লাগালেন তাঁরা। কৃষকরা বললেন, আমফানের জেরে ঝড় বৃষ্টি নিঃস্ব করে ছেড়েছে। কিন্তু চাষ করেই খেতে হবে। বিকল্প কোনও পথ নেই। এভাবেই প্রকৃতির খামখেয়ালিপনার সঙ্গে অসম লড়াই চলবে। আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে সব নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাকে সঙ্গী করেই চাষ করতে হবে।
শুধু পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৫৭০ কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে। তার সিংহভাগ ক্ষতি বোরো ধানের। এছাড়াও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তিল, বাদাম, পাট, সবজি চাষের। অনেক জমিতে ধান কাটা হয়নি। সেসব জমির ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে। শিষ থেকে ধান ঝরে গিয়েছে। কাটা ধান জলে পচছে। কালনার বাসিন্দা অনিল রায় আড়াই বিঘে জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছিলেন। ফলন ভালো হবে বলেই আশা করেছিলেন। কিন্তু আমফান সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে। জমির ধারে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ঝড় বৃষ্টিতে সব ধানগাছ শুয়ে পড়েছে। কিছু ধান ছেঁকে তুলেছি। তবে তা বিক্রি হবে কিনা ঠিক নেই। এখন আবার বাড়তি খরচ করে জমি পরিষ্কারের জন্য ধান গাছ কাটতে হবে। সংসার চালাতে জমি বিক্রি ছাড়া উপায় দেখছেন না তিনি।
বারো বিঘে জমিতে পাট চাষ করেছিলেন পরেশ দাস। বললেন, পেঁয়াজ তুলে পাট চাষ করি। বিঘেয় পাঁচ হাজার টাকা খরচ হয়ে গিয়েছিল। পাট চাষ পুরোপুরি শেষ হয়ে গিয়েছে। সমবায় সমিতি থেকে ঋন নিয়ে চাষ করেন এখানের কৃষকরা। ফসল উঠলে ঋন শোধ করা হয়। এবার কিভাবে ঋন শোধ করব, কী করেই বা পরবর্তী চাষ করবো ভেবে উঠতে পারছি না।
সবজি চাষ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত হারাধন দাসের। বলেন, শশা, ঝিঙে, উচ্ছে, পটল, লাউয়ের মাচা ভেঙে পড়ে গিয়েছে। ওসব গাছে আর ফলন হবে না। ঢেঁড়শ গাছ শুয়ে পড়েছে। ফুল পচে গিয়েছে।গাছ উপড়ে গিয়েছে। ফলন আর হবে না বললেই চলে।