#মন্তেশ্বর: নিমেষে মিলছে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। বাড়িতে বসেই কার্ড মিলছে হাতে হাতে। তার মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন অনেকেই। নির্বাচনী প্রচারে সেই সাফল্যের কথা তুলে ধরছে শাসক দল তৃণমূল। বিজেপি অবশ্য বলছে, এই কার্ড আসলে নির্বাচনী চমক, কাজের কিছু নয়।
বাবলু মল্লিক। পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর থানা এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয় দেনুড় পঞ্চায়েত অফিসে রাজমিস্ত্রির কাজ করছিলেন তিনি। তিনতলার ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। হাত-পা ভেঙে যায়। বর্ধমানের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করতে হয়েছে তাঁকে। প্রয়োজন হয় জরুরি অস্ত্রোপচারের। তার জন্য প্রয়োজন ছিল ৫০ হাজার টাকা। এত টাকা কোথায় মিলবে তা ভেবে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল পরিবার। মুশকিল আাসান হয়ে দেখা দেয় তৎকাল স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। আহত হওয়ার পরই তার হাতে সেই কার্ড তুলে দেয় প্রশাসন। সেই কার্ড দেখিয়েই বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাচ্ছেন বাবলু মল্লিক। অস্ত্রোপচারও হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তিনি এখন বিপদমুক্ত।
দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে গিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করলে খুব তাড়াতাড়ি হাতে আসছে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। শারীরিক সমস্যার কারণে যাঁরা সেই শিবিরে যেতে পারছেন না তাঁদের বাড়িতে গিয়ে হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে এই তৎকাল স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। সঙ্গে সঙ্গে একেবারে ঘরে বসেই নিখরচায় চিকিৎসা করানোর সুযোগ মেলায় খুশি উপভোক্তারা।
বাসুদেব দে ঘরের বিছানায় শুয়েই হাতে পেয়েছেন স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। বর্ধমান পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাঝবয়সী এই ব্যক্তি শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছ বছর শয্যাশায়ী। দুয়ারে সরকার শিবিরে যাওয়ার অক্ষমতার কথা জানতে পেরেই প্রশাসনের কর্মী আধিকারিকরা বাড়ি গিয়ে ছবি তুলে সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড তার হাতে দেয়। স্বভাবতই এই উদ্যোগে খুশি বাসুদেব বাবু। তিনি জানান, এই কার্ড নিয়ে এবার চিকিৎসা করাতে পারবেন। শুধু শহর এলাকায় নয়, মন্তেশ্বরের বাবলু মল্লিকের মতো তৎকাল কার্ড হাতে পাচ্ছেন গ্রামীণ এলাকার অনেকেই। বর্ধমানের বড়শুল গ্রামের বাসিন্দা মলয় দে তৎকাল কার্ড হাতে পেয়েছেন ঘরে বসেই।
রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস যখন এই স্বাস্থ্য সাথী কার্ড সহ বিভিন্ন উন্নয়ন পরিষেবার কথা প্রচারে এনে ভোট বৈতরণী পার হতে চাইছে, ঠিক তখন তাকে কোনো গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি। তাদের বক্তব্য, এই কার্ড কোনও কাজেরই নয়। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, একের পর এক কার্ড হাতে ধরিয়ে দিলেই হবে না পরিষেবা দিতে হবে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক নার্স ওষুধ-সহ পরিকাঠামো নেই। বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেখালে রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই কার্ড নির্বাচনী চমক ছাড়া আর কিছু নয়।
Saradindu Ghosh