#বর্ধমান :করোনা পরিস্থিতিতে এবার বর্ধমানে শবদাহ করার ক্ষেত্রে সময়ের বিধি-নিষেধের কবলে পড়লো মৃতদেহও। বর্ধমান পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই করোনা পরিস্থিতিতে বর্ধমানের নির্মল ঝিল শ্মশানে রাত দশটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত কোনও মৃতদেহ দাহ করা যাবে না। ফলে বিকেলে বা সন্ধ্যায় কেউ মারা গেলে এই শ্মশানে শবদাহ করার জন্য পরদিন সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। রাতের ওই সময় শুধুমাত্র করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন এমন দেহ দাহ করবে প্রশাসন। সেজন্যই এই বিধি নিষেধ বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
বর্ধমান শহর বা তার আশপাশ এলাকায় কেউ মারা গেলে সাধারণত নির্মল ঝিল শ্মশানে শবদাহ করা হয়। ইদানিং সেই শ্মশানে শবদেহের চাপ অনেক বেড়ে গিয়েছে। শুধু বর্ধমান তার আশপাশ এলাকা নয়, দূরদূরান্ত থেকে মৃতদেহ নিয়ে এই শ্মশানে আসছেন শবযাত্রীরা। অনেক ক্ষেত্রে করোনা আতঙ্কে এলাকায় শবদাহ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সেই সব গ্রামের বাসিন্দারা মৃতদেহ নিয়ে বর্ধমানের নির্মল ঝিল শ্মশানে আসছেন। অন্যদিকে, প্রশাসন প্রথমে মঙ্গলকোটে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতদের সৎকারের জন্য জায়গা চিহ্নিত করলেও পরবর্তী সময়ে মৃতদের বর্ধমানের নির্মল ঝিল শ্মশানে সৎকারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, করোনা আক্রান্ত হয়ে যাঁরা মারা যাচ্ছেন তাঁদের দেহ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বর্ধমানের করোনা হাসপাতাল বা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থাকছে। সেখান থেকে দূরবর্তী জায়গায় মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া করোনা আক্রান্ত দেহ সৎকারের লোক বা গাড়ি পেতেও সমস্যা হচ্ছে। তাই কাছাকাছি নির্মল ঝিল শ্মশানকেই করোনা আক্রান্ত দেহ সৎকারের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।
বর্ধমান পৌরসভার চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার অমিত কুমার গুহ বলেন, ইদানিং নির্মল ঝিল শ্মশানে মৃতদেহের চাপ বেড়েছে। গ্যাস চুল্লি বেশ কয়েক মাস বন্ধ। শুধুমাত্র ইলেকট্রিক চুল্লি ভরসা। তার উপর করোনাআক্রান্ত হয়ে মৃতদের এখানেই সৎকার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে কারণেই রাত দশটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত অন্য দেহ দাহ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ওই সময় শুধুমাত্র করোনা আক্রান্ত দেহ দাহ করা হবে। সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেই কাজ করা হচ্ছে। দাহ হওয়ার পর ইলেকট্রিক চুল্লি ও তার আশপাশ সহ শ্মশান চত্বর স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। এসবের জন্যও সময় প্রয়োজন। সেই জন্যই রাতে দাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।