দিঘা: বাংলা-ওড়িশা উপকূলেই অভিমুখ ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ (Yaas)-এর। বুধবার সন্ধ্যায় এটি আছড়ে পড়তে পারে দিঘা থেকে পারাদ্বীপের মাঝে স্থলভাগে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত। এই ঘূর্ণিঝড়ের বিস্তৃতি অনেকটা বেশি বলেই বেশি এলাকায় ক্ষতির আশঙ্কা বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।
বুধবার, ২৬ মে সকাল থেকেই উত্তর বঙ্গোপসাগর উপকূলে দাপট দেখাবে এই ঘূর্ণিঝড়। পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ আজ, রবিবার অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এটি উত্তর ও উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে মধ্য বঙ্গোপসাগরে আগামিকাল, সোমবার পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড়ে। বুধবার উত্তর বঙ্গোপসাগর পেরিয়ে তা আছড়ে পড়তে পারে বাংলা-ওড়িশা উপকূলে। কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। মৎস্যজীবীদের আজ, রবিবার সন্ধ্যা থেকেই সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছে আবহাওয়া দফতর ।
২২ মে শনিবার একটি নিম্নচাপ তৈরি হয় পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে। আন্দামান সাগর সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে আজ, রবিবার এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ক্রমশ এই গভীর নিম্নচাপ সোমবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। প্রথমে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম অভিমুখ থাকলেও পরে অভিমুখ পরিবর্তন হতে পারে। এখনও পর্যন্ত এই ঘূর্ণিঝড়ের যা অভিমুখ তাতে বাংলা -ওড়িশা উপকূল এলাকাতেই আছড়ে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা। বঙ্গোপসাগরে এই ঘূর্ণিঝড়ের বিস্তৃতি বাংলাদেশ থেকে উত্তর ওড়িশা উপকূল পর্যন্ত হবে। সেক্ষেত্রে সুন্দরবনের সাগরদ্বীপ দিয়েও স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। । ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সুন্দরবনের বাংলাদেশ উপকূল থেকে ওড়িশা উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত।
গুজরাতের চরম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় টাউটের পর যে ঘূর্ণিঝড় হবে তা আবহাওয়া দফতরের নিয়ম অনুযায়ী ওমানের দেওয়া নাম ‘ইয়াস’ (Yaas)। আরবি ভাষায় যার অর্থ ‘দুঃখ’।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে। সোমবার থেকে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের তিন জেলায় ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি শুরু হওয়ার সম্ভাবনা। উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে। ২৫ মে মঙ্গলবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে উপকূলের তিন জেলা ছাড়াও কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া তে। কলকাতায় বৃষ্টির সঙ্গে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইবে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই হালকা ঝড় বৃষ্টির পূর্বাভাস। ২৬ মে বুধবার প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়াতে। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা, হুগলি, হাওড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়াতে। এদিন বৃষ্টির সঙ্গে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে। পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় সবথেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা।
বুধবার থেকে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও বৃষ্টি শুরু হবে। উত্তরবঙ্গ সিকিম ও উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি তে বুধ ও বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
কলকাতায় আজ, রবিবার অস্বস্তিকর গরম আবহাওয়া। বিকেল বা সন্ধ্যের দিকে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস। আজ কলকাতায় সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। গতকাল, শনিবার বিকেলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ৷ স্বাভাবিকের থেকে যা ১ ডিগ্রি বেশি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৫১ থেকে ৮৯ শতাংশ।
দক্ষিণবঙ্গের বেশকিছু জেলাতে গরম অস্বস্তিকর আবহাওয়া থাকলেও বেলার দিকে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা কলকাতা, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি-তে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Cyclone, Cyclone Yaas