#শোভন দাস, মেদিনীপুর: কয়েক দিন আগেই হুগলি জেলায় কৌটোয় করে অর্থ সাহায্য তুলতে গিয়ে এক কোটি টাকা তুলে ফেলেছিল সিপিএম৷ সেই খবর নিয়ে রীতিমতো চর্চাও শুরু হয়৷ কিন্তু সর্বত্র দলের সামগ্রিক আর্থিক অবস্থা যে সুখকর নয়, দিন কয়েকের মধ্যেই সেই প্রমাণ মিলল পশ্চিম মেদিনীপুরে৷ নেতাই কাণ্ডে বাম কর্মীদের জামিন হলেও মুক্তি পেতে লাগল ১৭ দিন। কারণ জামিনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থই জোগাড় করতে পারেনি দল৷
লালগড়ের নেতাই গণহত্যা কাণ্ডে অভিযুক্ত দুই সিপিএম কর্মীর হাইকোর্ট জামিন মঞ্জুর করলেও, সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পেতে সময় লাগল ১৭ দিন। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি নেতাই গ্রামে গণহত্যা কাণ্ডে তৎকালীন ২০ জন বাম নেতা কর্মীর নামে অভিযোগ দায়ের হয়। গ্রেফতারও করা হয় ২০ জন অভিযুক্তকে। এর পর দীর্ঘ ১১ বছর ধরে এই মামলা চলছে মেদিনীপুর আদালতে। তারই মাঝে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানান অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে অবশেষে দীর্ঘ ১১ বছর পর গোয়ালতোড়ের দুই বাম কর্মীকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট।
কিন্তু আদালতের চক্কর কাটতে কাটতে দিশেহারা ও সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন নেতাই কাণ্ডে অভিযুক্ত বাম কর্মী সমর্থকরা। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে জামিনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থেরও সংস্থান করতে পারেননি তাঁরা৷ নেতাই কাণ্ডে দুই সিপিএম কর্মী পিন্টু রায় ও গাণ্ডিবন রায়ের গত ৪ জুলাই জামিন মঞ্জুর হলেও তারা মুক্তি পেল জেল থেকে ২০ জুলাই।
আরও পড়ুন: 'সিপিএমের আমলে দশ, পনেরো লাখ টাকায় চাকরি বিক্রি হয়েছে!' তীব্র আক্রমণ মমতার
গত ৪ জুলাই নেতাই কাণ্ডের দুই অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই কপি এসে পৌঁছয় মেদিনীপুর আদালতে। কিন্তু এই জামিনে কিছু শর্ত আরোপ করে আদালত। তাতে এই দুই অভিযুক্তের বেলবন্ড হিসাবে একেক জনের এক লক্ষ টাকা করে জমা দিতে নির্দেশ দেয় আদালত। জামিনের জন্য প্রয়োজনীয় ২ লক্ষ টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয় এই দুই অভিযুক্তকে। কারণ দুই সিপিএম কর্মীর পরিবার আর্থিক দিক দিয়ে স্বচ্ছল নয়। তাই ওই দুই কর্মীর পরিবার জামিনের অর্থের জন্য দ্বারস্থ হয় পার্টি নেতৃত্বের কাছে।
অন্যদিকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সিপিএমের সদস্য সংখ্যাও কমতে কমতে তলানিতে এসে ঠেকেছে। ফলে অর্থ সংগ্রহ করতে অনেকটাই সময় অতিক্রান্ত হয়ে যায় দলের।
অবশেষে বিভিন্ন মহলের চেষ্টায় সেই টাকা যোগাড় করে জমা দেওয়া হয় আদালতে। আর তারপরই আদালতের নির্দেশ মতো বুধবার সমস্ত কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরেই মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পান এই দুই সিপিএম কর্মী। দীর্ঘ ১১ বছর পর জেল থেকে মুক্তি পাওয়ায় তাঁদের খুশি পরিবার, পরিজন এবং দলের অন্যান্য নেতা কর্মী ও বাম আইনজীবীরা। এ দিন জামিনে মুক্তি পাওয়া সিপিএম কর্মীরা দাবি করেন, তাঁরা নেতাই কাণ্ডের সঙ্গে কোনও ভাবেই যুক্ত ছিলেন না। আর কেনই বা তাঁরা জেল খাটলেন তাও বলতে পারবেন না। নেতাই গণহত্যা কাণ্ডে ধৃত ২০ জন বাম নেতা কর্মীদের মধ্যে এ পর্যন্ত মুক্তি পেলেন ৪ জন, বাকি ১৬ জন এখনও জেলে রয়েছেন।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Cpim, Paschim Medinipore