হোম /খবর /দক্ষিণবঙ্গ /
করোনা আক্রান্তের মায়ের মৃত্যু, হাওড়ার রাস্তায় ৭ ঘণ্টা রাস্তায় পড়ে রইল দেহ

করোনা আক্রান্তের মায়ের মৃত্যু, হাওড়ার রাস্তায় ৭ ঘণ্টা পড়ে রইল দেহ

করোনা আক্রান্তের মায়ের মৃত্যু, ৭ ঘণ্টা রাস্তায় পড়ে রইল দেহ! করোনায় মৃত্যু হয়েছে, এই সন্দেহে দেহ তোলা হয়নি

  • Last Updated :
  • Share this:

#হাওড়া: করোনা আক্রান্তের মায়ের মৃত্যু, ৭ ঘণ্টা রাস্তায় পড়ে রইল দেহ! করোনায় মৃত্যু হয়েছে, এই সন্দেহে দেহ তোলা হয়নি। ৭ ঘণ্টা পর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ! অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল বালির হপ্তা বাজার।

ঘটনার সূত্রপাত গত ১৭ তারিখ। বালির হপ্তা বাজারের বাসিন্দা ৩৬ বছরের যুবক করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সেদিন থেকেই গোটা আবাসনে যুবকের পরিবার কার্যত একঘরে হয়ে যান। প্রশাসনের তরফে যুবকের মা ও বাবাকে গৃহবন্দি অর্থাৎ হোম আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই মতো যুবকের বাবা ও মা দুজনেই বাড়ুর বাইরে একপাও রাখেননি। এরমধ্যেই অসুস্থ হতে থাকেন যুবকের মা। শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। তবে জানা যায়, এই প্রথম নয়, এর আগেও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে অসুস্থ হয়েছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব ওই মহিলা । সোমবার সকাল থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। স্বামী একটি অ্যাম্বুল্যান্স ঠিক করে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানান মহিলার অনেকক্ষণ আগেই মৃত্যু হয়েছে। মৃতাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। সেই মতোই অ্যাম্বুল্যান্স করে দেহ নিয়ে বাড়ি ফেরেন স্বামী।কিন্তু আবাসনে ঢুকতেই বাধা দেন অন্যান্য আবাসিকরা।

আবাসিকদের বক্তব্য, ছেলে করোনায় আক্রান্ত, ফলে মহিলার মৃত্যুও হয়েছে কোরানতে! তাই আবাসনে দেহ নিয়ে ঘরে ঢোকা যাবেনা। করোনার কথা শুনে অ্যাম্বুল্যান্দের চালকও রাস্তায় দেহ ফেলে চম্পট দেয়। মৃতার স্বামী প্রতিবেশীদের কাছে বারবার সাহায্যের জন্য সৌড়ে গেলেও সবাই মুখ ফিরিয়ে নেয়। দেখতে দেখতে পেরিয়ে যায় ৭ ঘণ্টা! রাস্তায়, খোলা আকাশের নীচেই পড়ে থাকে মরদেহ। দফায় দফায় বৃষ্টিতে ভিজে চুপচুপে মরদেহ...অনেকেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেই ঘটনা দেখেছেন, মজাও পেয়েছেন হয়তো, কিন্তু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি!

মেলেনি মৃত্যুর কোনও সংশাপত্র, ফলে দেহ সৎকার করতেও পারেনি পরিবার। এইভাবেই ৭ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর, শেষমেশ স্থানীয় প্রাক্তন কাউন্সিলর ও বালি থানার পুলিশের হস্তক্ষেপে আসে শববাহী গাড়ি। রাস্তা থেকে দেহ তুলতে গেলে স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে পরে পুলিশও |

দেহ সৎকার হয় কোভিড ১৯-এর সবরকম বিধিনিষেধ মেনেই। ছেলে করোনা আক্রান্ত, তাই মহিলার মৃতদেহ সামান্য স্পর্শটুকুও করতে দিল না পাড়া-প্রতিবেশীরা! ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মৃতার পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, বারবার সাহায্য চাইলেও সামান্য শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের সময় লাগে ৫ ঘণ্টা।

DEBASHISH CHAKRABORTY

Published by:Rukmini Mazumder
First published:

Tags: Howrah deadbody