#কলকাতা: হাজার ব্যস্ততার মাঝেও মমতা ভোলেননি তাঁকে। রাজনৈতিক জনসভার মধ্যেই দু'দশকের পুরনো বান্ধবীর খোঁজ করেছিলেন। ভোট মিটিংয়ে নিয়ম ভেঙেই 'বুলু আসেনি'? বলে খোঁজ, পথ চেয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা এক অন্য আবহের জন্ম দিয়েছিল। বুলুদেবী আসেননি জেনে সামান্য আহত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলে,'না আসুক আমার কথাটা তো শুনতে পারবে।' হ্যাঁ কথাটা ঠিকই, তাঁর বার্তা পৌঁছেছে বুলুদেবীর কাছে। আকুতিটা ছিল দুই তরফেই। কিন্তু মন কাঁদলেও যেতে পারেননি বুলুদেবী, অনেক দিন ধরেই ঘরবন্দি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের বান্ধবী।
বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেলিকপ্টার নামে গুপ্তিপাড়া হাইস্কুলের মাঠে। বুলুদেবীর বড়ি সেখান থেকে মেরেকেটে দশ মিনিট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতি সম্পর্কে কমবেশি সকলেই জানেন। গুপ্তিপাড়ার কথা বলতে বলতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কথা তোলেন। হঠাৎই ব্যক্তিগত অনুষঙ্গে ঢুকে গিয়ে মমতা বলতে শুরু করেন, "আমার সঙ্গে ছোটবেলায় কাজ করত একটি ছোট্ট মেয়ে, বুলু৷ এখানে ওর বিয়ে হয়েছে গুপ্তিপাড়ায়৷ বুলু কি এসছে মিটিংয়ে? আয় একবার দেখা করে যা৷ আমরা যখন ছাত্র রাজনীতি করতাম তখন ও খুব আসত৷ "
বুলুদেবীর বাপের বাড়ি গুপ্তিপাড়ায়। তাহলে কী ভাবে যোগাযোগ? মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ঠিকানা ৩০/বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট। আর বুলুদেবী ও তাঁর ভাই ডাক্তার মনোতোষ গঙ্গোপাধ্যায়ের ডাকনাম ভোলা) মামাবাড়ির ঠিকানা ৩৮ হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট। অর্থাৎ বুলুদেবীর মামাবাড়ির লাগোয়া বাড়িটাই ছিল সেদিনের দামাল যুবনেত্রীর। ৮০-র দশকে প্রথম দেখা হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দশ বছর সক্রিয় রাজনীতিও করেন তিনি। ক্রমে রাজনীতির আঙিনা ছেড়ে সংসার শুরু করেন বুলুদেবী। যোগাযোগটা অবশ্য ছিন্ন হয়নি। বুলুদেবী বলছিলেন, "আমি বেশ কয়েকবার ছেলে, স্বামীর সঙ্গে ওঁর দেখা করিয়েছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেও দেখা হয়েছে। " মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মায়ের অসুস্থতার সময়ে গিয়ে দেখা করেন বুলুদেবী। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যস্ততা, বুলুদেবীর নিজের জীবনের নানা বাঁকের কারণেই নিয়মিত যোগাযোগ আর থাকেনি।
অবশ্য রোজের কথাবার্তা না থাকলেও মমতা তাঁকে ভোলেননি। আর তাতেই ভালো লাগায় ভরে গিয়েছেন তিনি। বলছিলেন, আমার কথা বললেন, ভালো লাগল।" সঙ্গে রয়েছে আফশোসও। সভায় যেতে না পারার। কিন্তু এত কাছে, তবু কেন গেলেন না বুলুদেবী?খুব সংক্ষেপে জানালেন, স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি আর বেরোন না বাড়ি থেকে। সেই কারণেই মন পড়ে থাকলেও যাওয়া হয়নি সভায়। গোটা রাজ্য চষছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তার মাঝেও বন্ধুকে ভোলেননি। সভাস্থলে দাঁড়িয়ে তাঁর ব্যক্তিগত দুঃসংবাদটা যদি জানতেন হয়তো নিজেই গিয়ে দেখা করে আসতেন, দু মিনিটের জন্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে কথা, তাঁকে আনপ্রেডিক্টেবল বলে চেনামহল।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।