#নন্দীগ্রাম: তৃণমূলের নজরে এবার নন্দীগ্রাম। নতুন বছরের তৃতীয় সপ্তাহেই নন্দীগ্রামে সভা করতে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামিকাল ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে তিনি সভা করবেন। প্রসঙ্গত, গত ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে সভা করার কথা ছিল মমতা বন্দোপাধ্যায়ের। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দলের কো-অর্ডিনেটর অখিল গিরি করোনা আক্রান্ত হওয়ায় সেই সভায় মমতা বন্দোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন না। তবে ৭ জানুয়ারি সকালে নন্দীগ্রামে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন তৃণমুল নেতারা। পরে নন্দীগ্রাম কলেজ মাঠে একটি সভা করে তৃণমূল কংগ্রেস।
২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামের গণ আন্দোলনে ৩ জনের মৃত্যু হয়। এই দিনটিকে স্মরণ করে প্রতি বছর স্মরণ অনুষ্ঠান করেন শুভেন্দু অধিকারী। এবার সেই একই দিনে নন্দীগ্রামের আন্দোলনকে স্মরণ করে সভা করবেন মমতা বন্দোপাধ্যায় এমনটাই জানিয়েছিলেন, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অখিল গিরি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, "মুখ্যমন্ত্রী আসছেন সভা করতে। নন্দীগ্রামের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তিনি ১৮ জানুয়ারি দিনটিকে বেছে নিয়েছেন আন্দোলনকারীদের স্মৃতিতে সম্মান জানিয়ে।" যদিও রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি'তে গেছেন শুভেন্দু অধিকারী। ছেড়েছেন বিধায়ক পদ। নন্দীগ্রামের বিধায়ক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ফলে সেই নন্দীগ্রামে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সভা ঘিরে আগ্রহ তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
প্রসঙ্গত, তিন সপ্তাহ আগেই শুভেন্দুর গড়ে সভা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে একাধিক নেতা দাবি করেছেন, নন্দীগ্রাম আন্দোলন ছিল স্থানীয়দের। মমতা বন্দোপাধ্যায় সেই আন্দোলনে যোগ দিয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যার জেরে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছে এই আন্দোলন। কাঁথিতে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুকে আক্রমণ করে সৌগত রায় বলেছেন, "মমতা না থাকলে নন্দীগ্রাম আন্দোলন হত না। নন্দীগ্রাম আন্দোলন সুফিয়ানের মতো স্থানীয় নেতারা করেছেন। কোনও সরস্বতীর বরপুত্র এসে সুন্দর দেখতে মানুষ এসে আন্দোলন করেননি।" এখন সেই আন্দোলন ভূমিতে মমতা বন্দোপাধ্যায় কি বলেন সে দিকেই চেয়ে রাজনৈতিক মহল। মাঝে একাধিক রাজনৈতিক পট বদল হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনীতিতে। জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সাংসদ শিশির অধিকারীকে। নয়া সভাপতি হয়েছেন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। চেয়ারম্যান থাকছেন শিশির অধিকারী।
অন্যদিকে দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ থেকে সরিয়ে নয়া চেয়ারম্যান সেখানে হয়েছেন অখিল গিরি। ফলে মমতা বন্দোপাধ্যায় সফরের আগে বদলেছে অনেক রাজনৈতিক সমীকরণ। সূত্রের খবর, মমতা বন্দোপাধ্যায় যেখানে সভা করবেন সেই সংসদীয় এলাকা দিব্যেন্দু অধিকারীর। যদিও আগামীকাল মুখ্যমন্ত্রীর সভায় অধিকারী পরিবারের দুই সদস্য যারা এখনও তৃণমূলে আছেন তারা কেউ যোগ দেবেন না। তবে আগামী ১৯ তারিখ মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সভার পাল্টা সভা করবেন শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয়।
ABIR GHOSHAL