#কৃষ্ণনগর: অন্যান্য বছরের মতোই জগদ্ধাত্রী পুজোর (Jagadhatri Puja) বিসর্জনের দাবিতে অবরুদ্ধ করে রাখা হল জাতীয় সড়ক৷ অবরোধ যখন চলছে, তখন যানজটে আটকে অ্যাম্বুল্যান্সের ভিতরেই তিলে তিলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছিল এক শিশু৷ শিশুটির পরিবারের সদস্য, অ্যাম্বুল্যান্সের চালকের বার বার কাকুতি মিনতিও তখন কানে তোলার সময় ছিল না অবরোধকারীদের৷ প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা গাড়িতে আটকে থেকেই শেষ পর্যন্ত প্রাণ যায় সাত বছরের ওই শিশুর৷
মঙ্গলবার রাতে মর্মান্তিক এই ঘটনার সাক্ষী থাকল নদিয়ার কৃষ্ণনগর (Krishnanagar)৷ শিশুটির মৃত্যুর পর অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগে পাঁচ অবরোধকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷
আরও পড়ুন: জগদ্ধাত্রী বিসর্জনে সাংয়ের দাবিতে মরিয়া, প্রাচীন ঐতিহ্যের সওয়ালে রাজপথে কৃষ্ণনগরবাসী
জগদ্ধাত্রী পুজোয় শোভাযাত্রা এবং যাবতীয় নিয়ম মেনে অন্যান্য বছরের মতোই বিসর্জন করতে দেওয়ার দাবিতে মঙ্গলবার সন্ধে থেকেই কৃষ্ণনগর শহরের বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ শুরু করেন পুজো উদ্যোক্তা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ৷ পুলিশের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, করোনা অতিমারি নিয়ন্ত্রণে হাইকোর্টের নির্দেশ থাকায় শোভাযাত্রা করে অন্যান্য বছরের মতো বিসর্জনের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়৷ দাবি পূরণ না হওয়ায় রাত এগারোটা নাগাদ কৃষ্ণনগরের পিডব্লিউডি মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ শুরু হয়৷
সেই সময়ই মালদহ থেকে কলকাতার দিকে আসা একটি অ্যাম্বুল্যান্স অবরোধের জেরে তৈরি হওয়া যানজটে আটকে যায়৷ মালদহের মোথাবাড়ির বাসিন্দা সাত বছরের একটি শিশুকে নিয়ে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে আসছিল অ্যাম্বুল্যান্সটি৷ ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত শিশুটিকে কলকাতায় নিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা৷ কিন্তু কৃষ্ণনগরের কাছে এসে আটকে যায় অ্যাম্বুল্যান্স৷
যানজটে আটকে থেকে অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যেই অবস্থা খারাপ হতে থাকে শিশুটির৷ কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরাও চেষ্টা করে যানজট কাটিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সটিকে বের করার পথ খুঁজে পাননি৷ অবরোধকারীদের বার বার অনুরোধ করেও কাজ হয়নি৷ শেষ পর্যন্ত ভোর রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যেই শিশুটির মৃত্যু হয়৷ তার পরে টনক নড়ে অবরোধকারীদের৷ কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে৷ যদিও মিছিলে অবরোধকারীদের একাংশ পাল্টা সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেছেন, অ্যাম্বুল্যান্স আটকানো হয়নি৷ অবরোধকারীদের ভাবমূর্তি খারাপ করতেই পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে এই অভিযোগ করা হচ্ছে৷
শিশুটির মৃত্যুর পরই কড়া পদক্ষেপ নেয় পুলিশও৷ ঘটনাস্থল থেকেই পাঁচ অবরোধকারীকে গ্রেফতার করা হয়৷ পুলিশ কড়া হতেই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় বাকি অবরোধকারীরা৷ ধৃত পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করে পুলিশ৷ প্রশ্ন উঠছে, আরও আগেই কেন অবরোধকারীদের সরাতে কড়া মনোভাব দেখালো না পুলিশ?
Samir Rudra
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Ambulance, Jagadhatri Puja, Nadia