#বর্ধমান: মথুরা ঘোষ। বাড়ি কাটোয়ার গোয়ারায়। ছানা বিক্রেতা। ৪ জনের সংসার। স্ত্রী ছাড়াও রয়েছে ১০ বছরের মেয়ে, ৮ বছরের ছেলে। এক বিঘা জমি। ছানা বিক্রি করে কোনও রকমে সংসার চলছিল। ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা থেকে শুরু করে চিকিৎসা, সংসারের অন্যান্য খরচ সবই ছানা বিক্রির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ছানার ব্যবসা কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অনেকেই ব্যবসা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। মথুরা ঘোষের মতো যাঁদের অন্য কোনও উপায় নেই তাঁরা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে মোটর সাইকেলে ছানা পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন।
১৭ বছর ধরে ছানার ব্যবসা করছেন মথুরা ঘোষ। এমন সমস্যার মুখোমুখি কোনও দিন হতে হয়নি। লকডাউনের আগে তাঁর ছানা যেত কলকাতা, দুর্গাপুরে। কাটোয়া থেকে ট্রেনে সরাসরি ছানা যেত হাওড়ায়। সেখান থেকে মিষ্টির দোকানে। ট্রেন চলাচল বন্ধ হতেই নিদারুন সমস্যার শুরু। এখন সকাল ৬ টায় ঘর থেকে বেরিয়ে ভাঙাচোরা রাস্তায় প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে মোটর সাইকেলে ৬০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে বর্ধমানে ছানা পৌঁছাচ্ছেন। বলছিলেন, রোদ বৃষ্টি তো আছেই। তার ওপর ভাঙাচোরা রাস্তায় উলটে পড়ে মৃত্যুর ভয় রয়েছে পদে পদে। ২ দিন মোটর সাইকেলের টায়ার পাংচার হয়ে সব ছানা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
মথুরা ঘোষের ভাষায়, '' বিক্রি তো করি দশ কেজি ছানা। গাড়ি ভাড়া ২ হাজার টাকা। অত টাকা কোথায় পাব। এক সঙ্গে কয়েক জন গাড়ি ভাড়া করলেও খরচ উঠবে না। তাই এই মোটর সাইকেলই ভরসা। অনেকেই ব্যবসা বন্ধ করে ট্রেন চালুর অপেক্ষায় দিন গুনছে।'' মথুরা বলছিলেন, ছানার ক্ষেত্রে সময় একটা বড় ব্যাপার। দেরি হলেই সে ছানা নষ্ট হয়ে যায়। আবার মিষ্টির দোকানেও সময়ে না পৌঁছলে সমস্যা। কারিগররা বসে থাকবেন। সময়ে মিষ্টি তৈরি হবে না। ট্রেনে পরিবহণ খরচ অনেক কম। আবার নির্দিষ্ট সময়ে তা পৌঁছেও দেওয়া যাচ্ছিল।
বাসে ছানা নিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। ছানার জল পড়ার সম্ভাবনা থাকে। একটা গন্ধও আছে। আপত্তি করেন যাত্রীরা। বাসে সময়ও বেশি লাগে। তাই মোটর সাইকেলে বর্ধমানে পর্যন্ত যাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু এভাবে প্রতিদিন যাতায়াত সম্ভব নয়। এভাবে দুর্গাপুর, কলকাতায় ছানা পাঠানো যাচ্ছে না।
SARADINDU GHOSH
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Burdwan