#রায়দিঘি: আমফানের তাণ্ডব চোখে দেখেননি। কিন্তু ঝড়ের শব্দে সর্বনাশের গন্ধ পেয়েছিলেন। বুঝেছিলেন , বিপর্যয় ঘটে গেছে। দুচোখের নিকষ কালো আঁধারের সামনে তখন অসহায় আলাউদ্দিন মণ্ডল । আমফানের উনিশ দিন পর থেকে আজও ভাঙা ঘরে, খালি পেটে জীবনের হিসেব কষছেন রায়দিঘির কাটনদিঘির দৃষ্টিহীন আলাউদ্দিন।
পাগলপারা ঝড় বোঝার ক্ষমতা নেই তাঁর। শন-শন ঝোড়ো হাওয়ায় শুধু বিপদের গন্ধ পেয়েছিলেন। আশপাশ থেকে শুনছিলেন, ঝড় এসেছে। সব লন্ডভন্ড করে দিচ্ছে। বাঁশের বেড়া দেওয়া এক চিলতে ঘরটা কেঁপে, কেঁপে উঠছিল । মন বলছিল, সব বোধহয় শেষ হয়ে যাচ্ছে।
পরেরদিন সকালে ছেলের হাত ধরে রাস্তায় পা রাখতেই, ভাঙা টিন, অ্যাসবেস্টাসের টুকরোয় হোঁচট খান রায়দিঘির কাটনদিঘির আলাউদ্দিন মণ্ডল। সেদিন বুঝেছিলেন, চেনা রাস্তাটা পালটে গেছে। তছনছ হয়ে গেছে চারদিক। লন্ডভন্ড গেরস্থালি হাতড়ে,চেনা কিছুই খুঁজে পাননি। মাথার উপর এক চিলতে চালটাও উড়িয়ে নিয়ে গেছে ঝড়।
ভ্যান চালাতেন। আটবছর আগে হঠাৎ এক অসুখে সুর-তাল কেটে যায় চোখের। সবাই বলে দৃষ্টিহীন। তখন থেকে পাড়া প্রতিবেশীর সাহায্যেই দিন গুজরান। আমফানের পর থেকে এখনও সরকারি ত্রাণ মেলেনি। অভিযোগ স্ত্রীর।
ঝড় থেমে গেছে কবেই। ঝড় আজ মনে। ঝড় পেটেও। ভিজে আসা শান্ত দু'চোখে আজ এক রাশ অভিমান।