#সিউড়ি: শতাব্দী প্রাচীন সিউড়ির বড় ঘড়ি আজ বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ১৯০২ সালে এই ঘড়ি তৎকালীন বীরভূমের হেতমপুরের রাজা মহিমা নিরঞ্জন চক্রবর্তী উপহার দিয়েছিলেন বীরভূম কালেকটরেটকে। সিউড়িতে জেলা কালেকটরের বিল্ডিংয়ের উপর এই দ্বিমুখী ঘড়ি বসানো হয়। ইংল্যান্ড থেকে আমদানি করা এই ঘড়ি ছিল সেক থমাস মডেলের। এই ঘড়িতে ছিল না কোনও দম দেওয়ার ব্যাপার, ঘড়ি চলত Weight System এ।
প্রতি ঘণ্টায়, ঘণ্টার আওয়াজ প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূর থেকে শুনতে পেতেন বীরভূমের সিউড়ির বাসিন্দারা। এই ঘড়ির আওয়াজেই ঘড়ি মেলাতেন অনেকে, অফিস - আদালত - স্কুলও বসতো এই ঘড়ির আওয়াজ শুনেই। ১৯৬৯ সালে এই ঘড়ির উপর বাজ পরে, তারপরই বন্ধ হয়ে যায় ঘড়ি। ঘড়ি সারানোর বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ঘড়ির প্রস্তুতকারক সংস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মেলেনা ঘড়ির অংশ। কাজেই, হয়ে ওঠেনা ঘড়ি মেরামত! ১৯৯৫ সালে বীরভূমের তৎকালীন জেলা শাসক দেবাশীষ সেন এই বড় ঘড়ি সারানোর উদ্যোগ নেন। ঘড়ি ঠিক করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন রাস্তার ধারে ঘড়ির দোকানে কাজ করা রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী নামে এক ব্যাক্তি। কিছু অবাক হয়েই সম্মতি দিয়েছিলেন জেলা শাসক। ঘড়ি পরীক্ষা করে লেদে ওই ঘড়ির কলকব্জা বানিয়ে ঘড়ি চালু করে দেন রবীন্দ্রনাথবাবু। ফের সিউড়ির বাসিন্দারা শুনতে শুরু করেছিলেন ঘড়ির ঘণ্টা! জেলা শাসক খুশি হয়ে ১০০ টাকা মাসিক বেতনে ঘড়ি দেখভালের দায়িত্ব দেন রবীন্দ্রনাথবাবুকে। বাড়তে বাড়তে বেতনের টাকার অঙ্ক এক সময়ে ৫০০ টাকাও হয়!
এরমধ্যে বেশ কয়েকবার বন্ধ হয়েছে এই ঘড়ি, সারাই করে ফের চালুও করা হয়! কিন্তু হঠাৎ-ই বড়সড় যান্ত্রিক সমস্যার কারণে ২০১৬ সাল থেকে বন্ধ হয়ে রয়েছে সিউড়ির বড় ঘড়ি। বন্ধ হয়ে যায় রবীন্দ্রনাথবাবুর মাস মাইনেও। রবীন্দ্রনাথ বাবু জানিয়েছেন, ঘড়ি সারাই করতে প্রয়োজন প্রায় ১ লক্ষ টাকা।তাঁর অভিযোগ, ব্যাস্ততার মাঝে প্রশাসন হয়ত ভুলে যেতে বসেছে বহু সময়ের সাক্ষী সিউড়ির বড় ঘড়িকে। বীরভূমবাসী আশা নিয়ে তাকিয়ে প্রশাসনের দিকে, কবে থেকে চলতে শুরু করবে এই বড় ঘড়ির কাঁটা... ফের শোনা যাবে ঘন্টার আওয়াজ...।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Siuri clock