#বাঁকুড়া : এক সময়ে রমরমা অবস্থা ছিল বাঁকুড়ার আলোর ব্যবসার, আজ তাই-ই গভীর অন্ধকারে আচ্ছন্ন। আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিপন্ন হয়ে উঠেছে বিষ্ণুপুরের লণ্ঠন শিল্প। বিভিন্ন রঙিন আলোর ঝলকানিতে আজ এই শিল্পীদের জৌলুষে পড়েছে ভাটা। একপ্রকার অসহায় অবস্থাতেই দিনযাপন শিল্পীদের। প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জ এলাকায় আগে অন্ধকার থেকে আলোর দিশা দেখাত যে লণ্ঠন, আজ সেই লন্ঠন আর জ্বলে না। মল্ল রাজাদের আমলে বিষ্ণুপুরে বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার করা হতো হরেক কিসিমের লন্ঠন। সেগুলি বানানো হতো বিষ্ণুপুরে ।
এখন বিভিন্ন বাড়িতে, মন্দিরে , রাস্তায় ব্যবহৃত হচ্ছে ইলেকট্রিক-এর বিভিন্ন এলইডি লাইট। ফলে কদর কমছে লণ্ঠনের। একটা সময় এই লন্ঠন দেশ বিদেশে পাড়ি দিত কিন্তু সময়ের পরিহাসে আজ সেই লন্ঠন বাড়ির এক কোণে পড়ে থেকে বিক্রির অপেক্ষায়। বাঁকুড়া জেলার সব থেকে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শহর বিষ্ণুপুর। বিভিন্ন শিল্পী আজও ঐতিহ্যর মাত্রা যোগায় বিষ্ণুপুরকে। আর এই বিষ্ণুপুর শহরে বাস লন্ঠন শিল্পীদের। সময়ের সঙ্গে হারিয়েছে এই শিল্পের চাকচিক্য। একরাশ বিপন্নতা যেন গ্রাস করেছে লন্ঠন শিল্পীদের, তবে শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে আজও রংবেরঙের লণ্ঠন গড়ছেন শিল্পীরা।
লন্ঠন তৈরিতে ব্যবহার করা হয় জিঙ্কের পরত দেওয়া লোহার পাত, কাঁচ। গত কয়েক বছরে সেই পাতের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। দাম বেড়েছে প্রয়োজনীয় রং, অ্যাসিড এবং কাঠকয়লার। কিন্তু সেই তুলনায় দাম বাড়েনি লন্ঠনের। আগে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় এই লন্ঠন বিক্রি হলেও এখ ৬০ থেকে ৭০ টাকা এই লণ্ঠনের খুচরো মূল্য। কিন্তু দাম পাচ্ছেন না শিল্পীরা। নেই সেরকম ক্রেতাদের চাহিদাও। এক সময় প্রায় ২০০ টি পরিবার এই কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, কিন্তু সময়ের সঙ্গে তা নেমে এসে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫ টি পরিবারে। পরবর্তী প্রজন্ম এই শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। বেছে নিয়েছেন অন্য পেশা। চরম দুর্দশায় দিন কাটছে বাঁকুড়ার লন্ঠন শিল্পীদের। তাঁদের অভিযোগ, মেলেনি কোনও সরকারি সাহায্য। এমন অবস্থায় কীভাবে চলবে সংসার? কীভাবে জুটবে পেটের ভাত? দুশ্চিন্তায় রাতের ঘুম চলে গিয়েছে শিল্পীদের। রাজ্য সরকারের কাছে করুণ আর্জি, পাশে দাঁড়াক প্রশাসন।
Joyjiban Goswami
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bankura