খানাকুল: কিষান ক্রেডিট কার্ডে লোন দেওয়ার নামে কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তৃণমুল নেতা তথা সমবায় সমিতির ম্যানেজারের বিরুদ্ধে। জেলাশাসকের নির্দেশের পর প্রায় ৫ মাস কেটে গেলেও তদন্তে এলেন না সমবায় আধিকারিকরা। কতদিনে মিলবে সুরাহা? ক্ষুব্ধ খানাকুলের চিংড়া এলাকার কৃষক থেকে তৃণমুল পঞ্চায়েত প্রধান।
অভিযোগ, ২০১৭ - ১৮ বর্ষে খানাকুলের চিংড়া সমবায় সমিতি থেকে কিষান ক্রেডিট কার্ডের ঋণ হিসাবে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা তোলা হয়েছ, যা নিয়মবহির্ভূতভাবে ওই এলাকার প্রভাবশালী তৃণমুল নেতাদের পাশাপাশি সমবায়ের এলাকার বাইরেও বিভিন্ন তৃনমুল নেতাকে কার্যত পাইয়ে দিয়েছেন স্থানীয় তৃনমুল নেতা তথা সমবায় সমিতির ম্যানেজার প্রভুনাথ পোড়েল। ঘটনাকে কেন্দ্র করে আর্থিক এই তছরুপের সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান কার্তিক ইসরের নেতৃত্বে এলাকার কৃষকরা পিটিশন দাখিল করেন। বিষয়টি নিয়ে গত ডিসেম্বরে তদন্তের নির্দেশ দেন হুগলির জেলাশাসক। কিন্তু এরপরেও সেই অর্থে কোনো তদন্তই হয়নি বলে অভিযোগ।
এদিন রাজ্য সমবায় দফতরের অধিকারিকদের চিংড়ায় অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আসার কথা ছিল। সেইমতো স্থানীয় কৃষক থেকে শুরু করে খানাকুল পুলিশের কর্মীদের বড় অংশও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু অবশেষে কোনো সমবায় আধিকারিকদের ঘটনাস্থলে আসতে দেখা যায়নি। ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছিল সমবায় দুর্নীতিতে খানাকুল সহ জেলা ও রাজ্যের বেশ কিছু প্রশাসনিক ব্যক্তিত্ব ও ব্যাঙ্কের একাংশের কর্মীরা যুক্ত আছে। এদিন তদন্তকারীদের না আসায় সেই অভিযোগ ফের তুলতে শুরু করেছেন এলাকাবাসীরা। এমনকি সমবায় মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও দাবি তুলেছেন বিক্ষুব্ধ কৃষদের একাংশ।
আরও পড়ুন: এসএসসি দুর্নীতিতে এবার বড় ঘটনার পূর্বাভাস! Google-কে চিঠি দিল সিবিআই! তুমুল চাঞ্চল্য
এদিকে সমস্ত বিষয়টিতে সমবায়ের ম্যানেজার শুধু নয়, আরও অনেক প্রভাবশালী যুক্ত বলে দাবি করেছেন খোদ স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান কার্তিক ইসর। যদিও কার্তিক ইসরের বিরুদ্ধেও লোনের নামে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি খানাকুল বিধানসভার পরাজিত তৃণমুল প্রার্থী মুন্সী নজিবুল করিমের বিরুদ্ধেও সমবায় সমিতি থেকে লোনের নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: দুটি মেইল আইডি থেকেই চাকরি কনফার্ম, কারা করেছিল? টেট দুর্নীতিতে বিরাট রহস্য ফাঁস
প্রশ্ন উঠেছে দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও জেলাশাসকের নির্দেশের পরেও কেন তদন্তে এত গড়িমসি চলছে? পিছনে কোন কোন প্রভাবশালীরা রয়েছে দুর্নীতির পিছনে? তাদের অঙ্গুলি হেলনেই কি তদন্ত ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে? কবে মিলবে সুবিচার? বিষয়টি নিয়ে সুর চড়িয়েছে বিজেপিও। দুর্নীতির সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছে তারা।
এদিকে দুর্নীতির বিষয়টি জানাজানি হতেই গা ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত ওই সমবায় সমিতির ম্যানেজার। সমবায় সমিতির কর্মীদের দাবি, তিনি কাজের জন্য অন্যত্র রয়েছেন। তবে সূত্রের খবর, তিনি এলাকাতেই গা ঢাকা দিয়েছেন। গত কয়েকদিন আগে পর্যন্ত বহাল তবিয়তে দিদির দূত হিসাবে কাজ করতেও দেখা গিয়েছে তাকে।
-------Suvojit Ghosh
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।