#আরামবাগ: স্বামী এখনও বিজেপি সাংসদ। তিনিও ছিলেন বিজেপির অন্যতম ভরসার মহিলা মুখ। তবু কয়েক মাস আগেই বিজেপি ছেড়ে হঠাৎই ফের তৃণমূলে নাম লেখান সৌমিত্র খাঁয়ের স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল। স্ত্রী তৃণমূলে যোগ দিতেই সাংবাদিক বৈঠকে, চোখের জল ফেলে স্ত্রীকে ডিভোর্স নোটিশ পাঠানোর কথা জানিয়েছিলেন সৌমিত্র। তবে, তৃণমূল সুজাতার উপর ভরসা রেখেছে। বিধানসভায় তাঁকে আরামবাগ আসন থেকে প্রার্থী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই আরামবাগে আজ ভোট। নিজের জয় ছিনিয়ে আনতে চেষ্টার কোনও কসুর করছেন না তিনি। ভোট শুরুর পরপরই সুজাতা অভিযোগ করেছিলেন, 'কিছু এলাকায় পরিস্থিতি ঠিক আছে। কিন্তু যে এলাকায় আমরা শক্তিশালী সেখানে তৃণমূলে ভোট দিলে তা চলে যাচ্ছে বিজেপিতে। আরান্দিতে আমাদের কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে।'
কর্মীদের মার খাওয়ার পরপরই আরান্দিতে চলে যান সুজাতা। সেখান বিজেপি কর্মীদের ঘেরাও, হামলার মুখে পড়েন তিনি। সঙ্গে তখন গুটিকয়েক রাজ্য পুলিশ। সুজাতা অবশ্য অকুতোভয়। হামলার মুখে পড়েও সুজাতা পালটা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, 'তোরা বদমাইশি করছিস! বেরিয়ে আয়, লুকিয়ে পড়েছিস কেন, সামনে আয়!' সুজাতার রুদ্রমূর্তিতে তখন পিছু হটতে শুরু করে বিজেপি কর্মীরা। এরপরই অবশ্য সুজাতা বলেন, 'আমি একলা মেয়ে বলে আমার উপর হামলা চালিয়েছে বিজেপি। আমার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে, কোমরে মেরেছে। কিন্তু আমি দেখে নেব বিজেপিকে। আরামবাগে আমিই জিতব।'
রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূল-বিজেপি উভয় দলের মধ্যে মহিলা নেত্রীদের মধ্যে সুজাতা 'অন্যরকম'। কম বয়সী নেত্রীর জেদ, রাজনৈতিক বোধ ও সংগঠন বোঝার ক্ষমতাই তাঁকে অন্য অনেকের থেকে আলাদা করে দিয়েছে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে নিজের লোকসভা কেন্দ্র বিষ্ণুপুরে ঢুকতেই পারেননি সৌমিত্র খাঁ। সেই সময় স্বামীকে জেতাতে দিনরাত এক করে দিয়েছিলেন সুজাতা। জয়ের রুটম্যাপ তৈরি করেছিলেন নিজের হাতেই। স্বামীকে বিজেপির হয়ে জিতিয়েও এনেছিলেন।
এবার সুজাতার অন্য লড়াই। আরামবাগে গত বিধানসভায় তৃণমূল অনেকটাই এগিয়ে থাকলেও পরিস্থিতি পালটে গিয়েছে। তাই সুজাতার কাছে এ এক অগ্নিপরীক্ষা। প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই আরামবাগের প্রায় সমস্ত অঞ্চল চষে ফেলেছেন সুজাতা। আজ পরীক্ষায় নেমেছেন তিনি। কতটা সাফল্য এল, তার উত্তর দেবে সময়। তবে, সুজাতা এখন থেকে নিজেকে নেত্রী হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছেন বলেই মত রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশের।