সুমন সাহা, বাসন্তী: ‘অ-এ অজগর আসছে তেড়ে’, কিম্বা ‘খোকা গেল মাছ ধরতে’ থেকে শুরু করে জাতীয় সঙ্গীত ‘জনগণমন অধিনায়কজয় হে’ কিংবা ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরার’ মতো ছড়া, গান শিখছে প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারা। কিন্তু এতে আর নতুন কী? পড়ুয়ারা স্কুলে এসব শিখবে এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু এগুলো যাঁর কাছ থেকে শিখছে এই খুদেরা তিনি একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা। রাস্তা দিয়ে গেলে কেউ জল ছিটিয়ে দেয় তো কেউ মুখ ঝামটা দিয়ে তাড়িয়ে দেয়।
বিষয়টি জানতে পেরে এই মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা বছর পঁয়তাল্লিশের কনকবালা মাইতির পাশে দাঁড়িয়েছেন বাসন্তীর চুনাখালি হাটখোলা অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা। স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য রান্না হওয়া মিড ডে মিলের খাবার থেকে কনকের জন্য দু মুঠো খাবারের ব্যবস্থা করেছেন তাঁরা। পাশাপাশি যাতে কনকের রাতের খাবারের অসুবিধা না হয় সেই দায়িত্বও নিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিমাই মালি।
আরও পড়ুন : কাঠফাটা গরমে পান করুন মাটির কলসির জল, বিদ্যুতের বিলের সঙ্গে কমবে আপনার শরীরের ওজনও
কিন্তু এ তো গেল একটা দিক, এই মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলার জন্য শুধু দুবেলা দুমুঠো খাবারের ব্যবস্থাই নয়, তাঁকে সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনতে আরও বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা। এর পরই স্কুলের প্রধান শিক্ষক লক্ষ করেন, প্রতিদিন স্কুলের গেটের সামনে বসে থাকা কনকের সঙ্গে স্কুলের পড়ুয়াদের বেশ বন্ধুত্ব হয়েছে। তাদের সঙ্গে নানা ধরনের খুনসুটি করে সে।
শুধু তাই নয়, বিভিন্ন ধরনের ছড়া ওই শিশুদের কাছে মাথা নাড়িয়ে নাড়িয়ে শোনায় সে। আর ছোট্ট পড়ুয়ারা সেগুলি তাঁর সঙ্গে আনন্দ করে আওড়াতে থাকে। বিষয়টি বেশ কিছু দিন লক্ষ করার পর প্রধান শিক্ষক স্কুলের টিফিনের সময় কনককে স্কুলের উঠোনে এসে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর পড়ুয়াদের পড়ানোর কথা বলেন। সে কথা শুনে খুশি হন মানসিক ভারসাম্যহীন ওই মহিলা। এর পর হাত পা নাড়িয়ে কিছুটা ব্রতচারী ভঙ্গিতে ছোট ছোট পড়ুয়াদেরকে ছড়া শোনাতে থাকেন তিনি। পড়ুয়ারাও অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে তাদের প্রিয় কনক দিদির সেই ছড়া আওড়াতে থাকে। আর এই ভিডিওই এখন সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ভাইরাল ।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: South 24 Parganas, Viral