শিলিগুড়ি : দোকানের উপরে লাগানো বোর্ডে লেখা– ‘দোকানদারের নাম- রানা দাস,মূক ও বধির।’ দীনবন্ধু মঞ্চ সংলগ্ন একটি ছোট দোকান, সেখানেই ইশারার মাধ্যমে ক্রেতাদের চাহিদা বুঝে জীবনযুদ্ধের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন শিলিগুড়ির বাগরাকোটের বাসিন্দা রানা। মূক ও বধির স্ত্রী মাম্পি তাঁর একমাত্র সঙ্গী।
আগে কী করতেন? হাতের ইশারার মাধ্যমে প্রশ্ন করতেই জানা গেল, একসময় দর্জির কাজ করতেন রানা। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির পর বদলে যায় জীবন। ইশারাতে রানা আরও বোঝানোর চেষ্টা করলেন, এখন দর্জির কাজটা একদম শেষ হয়ে গিয়েছে। তারপর থেকেই এই দোকানে বসা। একসময় অবশ্য ওই দোকানটা ছিল শঙ্কর চক্রবর্তী নামে এক ব্যবসায়ীর।বর্তমানে তিনি দীনবন্ধু মঞ্চের কর্মী। শঙ্করের কাছ থেকে মাসিক ৩৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে দোকানটি নিয়েছেন তিনি। শঙ্করের কথায় , ‘আগে এই দোকানটা আমারই ছিল। করোনা পরবর্তী সময়ে আমি দীনবন্ধু মঞ্চে কাজ পেলাম। এই মূক ও বধির দম্পতি দোকানটি নেবে বলে আমার কাছে অনুরোধ করলেন। আমিও ছেড়ে দিলাম।’
শুধু দোকানে বসলেই তো হবে না। ক্রেতাদের নিজের কথা বোঝানোর পাশাপাশি তাঁদের কথাও বুঝতে হবে। খুব অসুবিধা হলে ক্রেতাদের কাগজে নিজেদের কথা লেখার অনুরোধ করেন রানা । পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কথা জানতে চাইলে রানা কাগজে লেখেন তাঁদের দুই সন্তান রয়েছে। একজন পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে, অন্যজন প্রথম শ্রেণীতে। হাসিমুখে রানা বোঝানোর চেষ্টা করলেন, তিনি এবং তাঁর স্ত্রী জন্মআবধি মূক ও বধির হলেও তাঁদের দুই সন্তানই শুনতে ও বলতে পারে। সন্তানদের দেখাশোনার কাজে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তাই সকালে দোকানে বসেন রানা ও বিকেলে বসেন মাম্পি।
কত রোজগার হয় দিনে প্রশ্ন? করায় রানা ইশারায় বললেন, দিনে ৩০০ টাকার মতো ব্যবসা হয়। এও বললেন, সবাই সহযোগিতাই করেন তাঁদের সঙ্গে।
অনির্বাণ রায়
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Siliguri