#নয়াদিল্লি: রায়ান স্কুলে ছাত্র খুনের তদন্ত কি আরুষি-হেমরাজের মতো আরেকটি রহস্যের জন্ম দিতে চলেছে? হরিয়ানা পুলিশ ও সিবিআইয়ের বিরোধ সেই প্রশ্নই তুলে দিল। একই ঘটনায় আলাদা আলাদা ভাবে দুই অভিযুক্তের গ্রেফতার একাধিক প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র নিয়েও ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। সবমিলিয়ে, প্রদ্যুম্ন ঠাকুর খুনে অসঙ্গতি এখন পাহাড়প্রমাণ।
একটি খুন। অথচ আলাদা আলাদা ভাবে দু’জন অভিযুক্ত! হরিয়ানা পুলিশের দাবি, রায়ান স্কুলের ছাত্র প্রদ্যুম্ন ঠাকুর খুনে অভিযুক্ত বাস কনডাক্টর অশোক কুমার। সিবিআইয়ের দাবি, হত্যায় জড়িত একাদশ শ্রেণির ছাত্র। রাজ্য পুলিশ ও সিবিআইয়ের বক্তব্যে একাধিক অসঙ্গতি। ঠিক যেমনটা দেখা গিয়েছিল আরুষি-হেমরাজ হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে।
খুনের পর স্কুলবাসের কনডাক্টর অশোক কুমারকে গ্রেফতার করে হরিয়ানা পুলিশ। খুনের অস্ত্র হিসেবে উদ্ধার হয় একটি ছুরি। কিন্তু, বুধবার নাটকীয় মোড় নেয় ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত। খুনের অভিযোগে ওই স্কুলেরই একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রকে গ্রেফতার করে সিবিআই। কমোড থেকে উদ্ধার হয় আরও একটি ছুরি।
একই খুনে দুটি আলাদা আলাদা অস্ত্র উদ্ধার জোরাল প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে সিবিআইয়ের দাবি নিয়েও।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দাবি অনুযায়ী, যেভাবে প্রদ্যুম্ন ঠাকুরকে গলায় ছুরি মেরে খুন করা হয়েছে তাতে ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরনোর কথা। তাহলে, ধৃতের পোশাকেও রক্ত লাগার কথা। অভিযুক্ত রক্তমাখা পোশাক লুকলো কোথায়? তাকে কি কেউ সাহায্য করেছিল?
সিবিআইয়ের দাবি, চার বার জেরার পর ভেঙে পড়ে একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র। স্বীকার করে খুনের কথা। কিন্তু, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
অপরাধীর মনস্তত্ত্বের নানা উদাহরণ বলছে, খুনের পর সাধারণত বেপাত্তা হয়ে যায় খুনি। কিন্তু, এক্ষেত্রে তা ঘটেনি। বরং, উল্টে ঘুরপথে অভিযুক্ত ক্লাসে পৌঁছেছিল। অপরাধ সম্পর্কে সহপাঠীদের কিছুটা আন্দাজও দিয়েছিল। কেমন এমন আচরণ?
তদন্তকারী দুই সংস্থার মধ্যে যে ঘোর মতবিরোধ তা স্পষ্ট হয়েছে বুধবারই। হরিয়ানা পুলিশের বিরুদ্ধে অশোককে চাপ দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ের অভিযোগ তুলেছে সিবিআই। সাফাই দিতে বৃহস্পতিবার আসরে নামে হরিয়ানা পুলিশ।
২০০৮ সালে নয়ডায় আরুষি তলওয়ার ও হেমরাজ হত্যাকাণ্ডে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। সিবিআই তদন্তে এখনও অধরা খুনিরা। প্রদ্যুম্ন খুনের তদন্তেও কি তারই ছায়া?