পূর্ব বর্ধমান : ভরা শ্রাবণেও বৃষ্টির দেখা নেই । তার উপর ডিভিসি সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে, জলাধারে সেচের জল দেওয়ার মতো জল নেই । যে জল রয়েছে তা থেকে জল দেওয়া হলে ডিভিসির জলাধার থেকে যে সমস্ত জায়গায় পানীয় জল সরবরাহ করা হয় তাতে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেবে। তাই চলতি খরিফ চাষে বর্তমান পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই কোনওরকম সেচের জল দেওয়া যাবে না। এখন তাই পূর্ব বর্ধমান জেলায় চাষ বাঁচাতে রিভার পাম্প ও সাবমার্সিবল-ই ভরসা।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, খরিফ মরশুমে পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রায় ৩ লক্ষ ৮১ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। সেখানে জুলাই মাসের শেষে মাত্র ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান করা সম্ভব হয়েছে। ফলে জলের অভাবে ব্যাপক পরিমাণ জমিতে যে ধান চাষ করা সম্ভব হয়নি তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না । কৃষি দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে,পূর্ব বর্ধমানে জুলাই মাসে প্রায় ২ লক্ষ ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়ে যায়। সেখানে জুলাই মাসের শেষ পর্যন্ত এখন চাষ করা সম্ভমপর হয়ে উঠেছে প্রায় ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে । সেই নিরিখে প্রায় ৬৩ % ঘাটতি আছে।
শুক্রবার জেলা প্রশাসনের জরুরি বৈঠক ডাকা হয় পূর্ব বর্ধমান জেলাশাসকের সভাকক্ষে। বৈঠকের পর জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া জানান, ‘‘এখনও পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে ৫৬.৮৮ শতাংশ । আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ১৫ অগাস্টের আগে ভাল বৃষ্টির সম্ভাবনা কম । তাই এমতাবস্থায় পূর্ব বর্ধমান জেলার চাষকে বাঁচাতে এদিন বিদ্যুৎ দপ্তরের কাছে দ্রুত আরএলআই বা নদীসেচ প্রকল্পগুলিকে চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
আরও পড়ুন : অনাবৃষ্টির জন্য় নদীতেই পাট জাগ, ভেসে উঠছে মরা মাছ!
একইসঙ্গে বেসরকারি মালিকানায় থাকায় সাবমার্সিবল পাম্পগুলিকেও যাতে ন্যূনতম টাকা নিয়ে অস্থায়ীভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া যায় সে ব্যাপারে আবেদন করা হয়েছে। বর্তমানে গোটা জেলায় ২৮ হাজার ৯৬৩ টি সাবমার্সিবল রয়েছে। যার মধ্যে চালু রয়েছে ১৩ হাজার ৪৯৬টি এবং বন্ধ রয়েছে ১৯ হাজার ৭৮১টি। গোটা জেলায় ভূগর্ভস্থ জলের পরিস্থিতি দেখে জেলার কয়েকটি ব্লককে ক্রিটিক্যাল এবং কয়েকটি ব্লককে সেমি ক্রিটিক্যাল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলির মধ্যে ভাতার, কেতুগ্রাম, পূর্বস্থলি ২ এবং কালনা ২ ব্লককে ক্রিটিক্যাল হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেমি ক্রিটিক্যাল ব্লক হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে মঙ্গলকোট, মন্তেশ্বর, পূর্বস্থলি ১, রায়না -২ এবং কালনা ১নং ব্লক।
আরও পড়ুন : ফের তোলাবাজি! 'এক লাখ না দিলে বন্ধ হবে কাজ', মেমারিতে হুমকি নেতার
অন্যদিকে, জেলাশাসক প্রিয়াংকা সিংলা জানিয়েছেন, ‘‘গোটা জেলায় এখনও পর্যন্ত খরিফ চাষে পিছিয়ে রয়েছে ৬২ শতাংশ। মাত্র ৮০ হাজার হেক্টর এলাকায় খরিফ চাষ হয়েছে। বাকি রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ হেক্টর এলাকা।’’ স্বাভাবিকভাবেই চাষ বাঁচাতে তাঁরা বিদ্যুৎ দফতরের কাছে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার বিষয়ে আবেদন জানিয়েছেন।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Agriculture, East Bardhaman