#নয়াদিল্লি: ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার পর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে দেশীয় সংবিধান। যা ভারতকে ধর্মনিরপেক্ষ বলে প্রতিষ্ঠা করেছে বিশ্বের দরবারে। কিন্তু এই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে একজোট হওয়াই যেমন দেশের প্রথম স্বাধীনতার লড়াই নয়, তেমনই ধর্মনিরপেক্ষতার লক্ষ্যে জেহাদও এ দেশে চিরকাল আবহমান। প্রতি বছর ২৪ নভেম্বর যা আমাদের নতুন করে মনে করিয়ে দেয়। মানবাধিকার বললে মানবাধিকার, স্বাধীনতা বললে স্বাধীনতা, ধর্মনিরপেক্ষতা বললে ধর্মনিরপেক্ষতা- দিল্লির চাঁদনি চকে ১৬৭৫ সালে পথের ধুলোয় গুরু তেগ বাহাদুরের ছিন্ন মস্তক লুটিয়ে পড়ার ঘটনা আজও আমাদের নতশির হতে বাধ্য করে।
ইতিহাস বলে, দিল্লির তখতে তখন আসীন রয়েছেন মুঘল সাম্রাজ্যের তথাকথিত শেষ গৌরবময় প্রতিনিধি ঔরঙ্গজেব। সারা দেশকে ইসলাম ধর্মের অধীনে নিয়ে আসার লক্ষ্যে ফরমান জারি করেছেন বাদশাহ। যা ঘোষণা করে দিয়েছে স্পষ্ট- যিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবেন না, মৃত্যুদণ্ডই তাঁর একমাত্র প্রাপ্য!
ঔরঙ্গজেবের এই ফরমান দেশময় রাষ্ট্র হয়ে যাওয়ার পর খুব স্বাভাবিক ভাবেই চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছিল অ-ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে। ইতিহাস বলে, এই সময়ে মুঘল সম্রাটের অত্যাচার থেকে আত্মরক্ষার জন্য ৫০০ কাশ্মীরী পণ্ডিত শরণাপন্ন হয়েছিলেন গুরু গোবিন্দ সিংয়ের। তাঁদের দুর্দশার কথা শুনে গোবিন্দ সিং জানান- এ ঘটনার প্রতিকার একমাত্র করতে পারেন তাঁর পিতা গুরু তেগ বাহাদুর।
অতঃপর শিখ ধর্মের এই নবম গুরু বার্তা পাঠান ঔরঙ্গজেবের দরবারে- যদি সম্রাট তাঁকে ইসলাম ধর্মের অধীনে নিয়ে আসতে পারেন, তা হলে সারা দেশ এই ধর্ম মেনে নেবে। অন্যথায় হার মানতে হবে সম্রাটকে!
শর্তের কথা শুনে ঔরঙ্গজেব আনন্দপুর সাহিব থেকে দিল্লিতে অনুচরসহ বন্দী করে নিয়ে আসেন গুরু তেগ বাহাদুরকে। পাঁচদিন ধরে চলে তাঁদের উপরে নির্মম অত্যাচার। গুরুর চোখের সামনে তাঁর অনুচরদের জীবন্ত দগ্ধ করা হয়। এর পরেও যখন তিনি ইসলাম ধর্ম নিতে স্বীকৃত হননি, তখন আজকের দিনে দিল্লির চাঁদনি চকে প্রকাশ্য দিবালোকে তাঁর মস্তক কেটে নেওয়া হয় ঔরঙ্গজেবের আদেশে!
আজও রাজধানীর ওই স্থান গুরু তেগ বাহাদুরের নামাঙ্কিত হয়ে রয়েছে শিশ গঞ্জ গুরুদোয়ারার সামনে। যা আমাদের যে কোনও রকমের জীবনযুদ্ধে নিজের যুক্িসঙ্গত সিদ্ধান্তে অটল থাকার প্রেরণা জোগায়!
Keywords:
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।