হোম /খবর /পাঁচমিশালি /
মাঘী পূর্ণিমা ২০২১: ব্রত, উপবাস এবং সত্যনারায়ণের পূজার জন্য জেনে নিন সঠিক তিথি

মাঘী পূর্ণিমা ২০২১: ব্রত, উপবাস এবং সত্যনারায়ণের পূজার জন্য জেনে নিন সঠিক তিথি

মাঘ মাসের পূর্ণিমা তিথি একটু বিশেষ ভারতীয় ধর্মের পটভূমিকায়। এই দিনটির রয়েছে বিশেষ মাহাত্ম্য

  • Share this:

যে কোনও মাসেই একটি করে পূর্ণিমার উপস্থিতি থাকে। সাধারণত অনেক পূর্ণিমা তিথিতেই বাড়িতে সত্যনারায়ণের পূজার আয়োজন করে থাকেন ভক্তেরা। কিন্তু এই মাঘ মাসের পূর্ণিমা তিথি একটু বিশেষ ভারতীয় ধর্মের পটভূমিকায়। এই দিনটির রয়েছে বিশেষ মাহাত্ম্য। কেন, সেই কথায় আসার আগে দেখে নেওয়া যাক পঞ্চাঙ্গ অনুসারে মাঘী পূর্ণিমা তিথি কখন শুরু হচ্ছে, শেষ-ই বা হচ্ছে কখন!

মাঘী পূর্ণিমা তিথির সময়কাল:

২৬ ফেব্রুয়ারি পড়েছে ২০৭৭ বিক্রম সম্বতের মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে। বার হল শুক্র এবং এই চতুর্দশী তিথি থাকবে ২৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর ৩টে ৪৯ মিনিট পর্যন্ত। এর পরে শুরু হয়ে যাবে পূর্ণিমা তিথি। শনিবার ২৭ জানুয়ারি দুপুর ১টা ৪৬ মিনিট পর্যন্ত এই পূর্ণিমা তিথি থাকবে।

তাই যাঁরা মাঘী পূর্ণিমা ব্রত উদযাপনে উপবাস পালন করতে চান, তাঁদের ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকেই উপবাসে থাকতে হবে। বাড়িতে সত্যনারায়ণের পূজার আয়োজন করলে তা ২৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর ৩টে ৪৯ মিনিটের পর থেকে ২৭ জানুয়ারি দুপুর ১টা ৪৬ মিনিটের মধ্যে করাই প্রশস্ত!

মাঘী পূর্ণিমা তিথির উদযাপন:

এই দিনটি হিন্দু ধর্মে পুণ্যস্নানের জন্য বিখ্যাত। অনেকেই প্রয়াগ, কাশী, গঙ্গা বা নিকটবর্তী জলাশয়ে স্নান করে, তর্পণ করেন বিধিমতে। এই দিনটি তীর্থভ্রমণের পক্ষেও প্রশস্ত।

মাঘী পূর্ণিমা তিথির হিন্দু ধর্মে মাহাত্ম্য:

মাঘ মাসের এই পূর্ণিমা তিথির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে দেবী কালী, ভগবান বিষ্ণু এবং গৌতম বুদ্ধের নাম। হিন্দু এবং বৌদ্ধ- উভয় সম্প্রদায়ের কাছেই এই দিনটির মাহাত্ম্য অপরিসীম।

মাঘী পূর্ণিমা তিথির ব্রতকথা এবং দেবী কালীর আরাধনা:

একদা কান্তিকা নগরে ধনেশ্বর নামের এক অপুত্রক, দরিদ্র ব্রাহ্মণ বাস করতেন, ভিক্ষাবৃত্তিই ছিল তাঁর জীবিকা। কিন্তু অপুত্রক ব্রাহ্মণকে অনেকেই ভিক্ষা দিতে চাইতেন না। সে রকমই এক গৃহকর্তা একবার ধনেশ্বরকে ভিক্ষা দিতে অস্বীকার করেন। কিন্তু ব্রাহ্মণের দুরবস্থা দেখে তাঁর করুণা হয় এবং তিনি মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে দেবী কালীর আরাধনার কথা জানিয়ে দেন। সেই পরামর্শ মতো মাঘ মাসের পূর্ণিমায় দেবীকে উপাসনা করে বিপুল সম্পত্তি এবং পুত্রসুখের মুখ দেখেছিলেন ব্রাহ্মণ, তাঁর ধনেশ্বর নাম সার্থক হয়েছিল।

মাঘী পূর্ণিমা এবং ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা:

বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের কাছে এই তিথিটি অত্যন্ত পুণ্যদায়ক। চতুর্দশী থেকেই তাঁদের অনেকে অনবধান উপবাস শুরু করেন। এবং পূর্ণিমায় যজ্ঞ করে উপবাস ভঙ্গ করেন। এই তিথিতে সত্যনারায়ণের পূজার প্রচলন রয়েছে। এছাড়াও ফুল, ফল, দূর্বা, পান, সুপারি, নৈবেদ্য, দীপ, ধূপ সহকারে বিষ্ণুর আরাধনা করলে সংসারে শান্তি বিরাজ করে।

মাঘী পূর্ণিমা তিথির ব্রতকথা এবং গৌতম বুদ্ধ:

বলা হয়, এই পুণ্যলগ্নেই গৌতম বুদ্ধ তাঁর মহাপরিনির্বাণ অর্থাৎ দেহত্যাগের কথা ঘোষমা করেছিলেন। যা উচ্চারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব আলোড়িত হয়, দেখা দেয় ভূমিকম্প। শিষ্যেরা ভয় পেয়ে গেলে বুদ্ধ তাঁদের আত্মোন্নতির মার্গে এবং ধর্মপথে অবিচল থাকার উপদেশ দিয়েছিলেন। সেই সূত্রে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা এই দিনে বিহারে দীপদান এবং সঙ্ঘে অন্নদান করেন।

Published by:Ananya Chakraborty
First published: