SHIBASHIS MAULIK
#কলকাতা: কালীপুজোর ঠিক আগের দিন ভূত চতুর্দশী। শোনা যায়, এ দিন নাকি মামদো, ব্রহ্মদত্যি, পেতনিদের বিশেষ দিন। তাঁরা নাকি এ দিন দেখা-সাক্ষাৎও দেন। এ বছর ভূত চতুর্দশীর দিনই ফ্রাইডে দ্য থার্টিনথ৷ ভূতে বিশ্বাসীদের মতে, এ হল ভূতেদের জন্য মহাশুক্রবার। সিনেমার ভাষায় বললে, ব্লকব্লাস্টার ফ্রাইডে। কলকাতায় তেনাদের অনেক আস্তানার খোঁজ মেলে। পাড়ার চায়ের দোকান থেকে গা ছমছমে গল্পের আসর, আলোচনায় জানা যায় তাদের অনেক ঠিকানা ---- ফোর্ট উইলিয়ম, রাইটার্স, রেড রোড, রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো।
বেহালা, ট্যাংরা, বো ব্যারাকের বিভিন্ন অ্যাংলো পরিবার ফ্রাইডে দ্য থার্টিনথকে অভিশপ্ত দিবস হিসেবেই মানেন। এখনও তাঁরা এদিন কোনও শুভ কাজ করতে চান না। তেরো তারিখ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনও এক অজানা ভয় তাঁদের ঘিরে থাকে। বাইবেলে যদিও ফ্রাইডে দ্য থার্টিনথের কোনও উল্লেখ নেই। বাইবেল বিশেষজ্ঞ তথা কলকাতায় খ্রীষ্টান বারিয়াল বোর্ডের সচিব অসীম কুমার বিশ্বাস জানান, " বাইবেলে ফ্রাইডে দ্য থার্টিনথেত কোনও উল্লেখ নেই। বাইবেলে একটাই ফ্রাইডে সেটা গুড ফ্রাইডে। এটা কোনও সিনেমা থেকে ছড়িয়েছে। আমরা মানি না। তবে কেউ মানে, কেউ মানে না।"
ভূত চতুর্দশী হোক আর ফ্রাইডে দ্য থার্টিনথ; কেউ মানেন, কেউ মানেন না। বাংলা সাহিত্যে ভালো ভূতের গল্প বারবার শুনিয়েছেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়৷ তিনি প্রথা হিসেবেই মানেন ভূত চতুর্দশী। তিনি জানান, "আজকাল মানুষ সবেতেই খুব কারণ জিজ্ঞাসা করে। বিদেশে কিন্তু আনন্দের জন্যই হ্যালউইন হয়। আমাদের বাড়িতে ভূত চতুর্দশী একটা প্রথা। তাই আমি মানি।"
মনোবিদদের মতে, ভূত হোক আর ভয়। সবই মনের খেল। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট জয়িতা সাহা বলেন, ' পুরোটাই সাইকোলজিকাল। আপনি সকাল থেকে ভাবছেন, কিছু একটা খারাপ হবেই। তারপর একটা দুর্ঘটনা ঘটল। আপনি অমনোযোগী ছিলেন তাই। দোষ হল ফ্রাইডে দ্য থার্টিনথের।"ভূত মানে কী শুধুই ভয়? বাংলা সাহিত্যে বারবার ভালো ভূতের গল্প তুলে ধরেছেন সুকুমার রায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। তারা মানুষের উপকার করে। তারা বরুণদের অঙ্ক শেখায়। সেরকমই এক ভালো ভূতের অপেক্ষায় শহর। কোনও এক ক্যাসপার কী এক চুটকীতে উধাও করবে করোনা ভাইরাস!