#জলপাইগুড়ি: চা-বাগানে কাজ করার সময়ে হঠাৎই থাবা বসিয়েছিল চিতাবাঘ। একাই বাঘের সঙ্গে লড়াই করে নিজের প্রাণ বাঁচালেন মহিলা। বাঘ তাড়ালেন নিমেষেই। ঘটনাটি জলপাইগুড়ির ভাতখাওয়া চা বাগানের। পরে ওই মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রাজ্যের উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু এলাকায় চা-বাগানে এমন ঘটনা ঘটেই থাকে। অনেক সময়েই লোকালয়ে ঢুকে পড়ে চিতাবাঘ বা অন্যান্য বন্য জন্তুরা। যার ফলে চা-বাগানে বা এই এলাকাগুলির জঙ্গলে কার্যত প্রাণ হাতে নিয়েই কাজ করতে হয় মানুষজনকে।
সংবাদ সংস্থা PTI-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল রাজাভাতখাওয়া চা-বাগানে কাজ করছিলেন লীলা ওরাওঁ নামের ওই মহিলা। পিছন থেকে হঠাৎই তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে চিতাবাঘটি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু নিজের প্রাণ বাঁচাতে বাঘের সঙ্গে লড়াই করেন লীলা। প্রায় ১০ মিনিট লড়াইয়ের পর কোনও মতে নিজেকে বাঁচিয়ে নেন তিনি। চিতাবাঘটিও মার খেয়ে পালিয়ে যায়।
এর পর তাঁর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে তাঁকে তড়িঘড়ি লীলাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই বর্তমানে তাঁর চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, লীলার শরীরে অনেকগুলি ক্ষত রয়েছে।
এ বিষয়ে ওই গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক সন্দীপন সরকার বলেন, ওই মহিলার চিকিৎসা চলছে। উনি এখন ভালো আছেন। আমরা ওঁর সাহসিকতাকে স্যালুট জানাই।
শুধু চিকিৎসকই নন, তাঁর সাহসিকতার প্রশংসা করছে এলাকার মানুষজন ও তাঁর সহকর্মীরাও। একা মহিলা যে ভাবে চিতা বাঘের সঙ্গে লড়াই করলেন, তা প্রশংসার যোগ্য, বলছে স্থানীয় প্রশাসনও।
জলপাইগুড়ি বা রাজ্যের উত্তর অংশে এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। মানুষের সঙ্গে এই জন্তুদের লড়াই বা পশুশিকার এখানকার প্রায় নিত্য ঘটনা। বছরের শুরুতে এখানে একটি গাড়ির ধাক্কায় দু'টি চিতা বাঘ ও পাঁচজন মানুষ জখম হয়। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের বানারহাট এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। একটি চিতাবাঘকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করেন বনবিভাগের কর্মীরা।
তার কিছু দিন পরই ৪ জানুয়ারি জলপাইগুড়ির বড়দিঘি চা-বাগানে একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়৷ চিতাবাঘটির শরীরের একাধিক জায়গায় গভীর ক্ষতচিহ্ন ছিল৷