Uttam Paul
#রায়গঞ্জ: মোবাইল চায়ের ব্যবসা করে সংসার চালাচ্ছেন রায়গঞ্জের বাসিন্দা বাবু পাল। রায়গঞ্জ নেতাজী সুভাষ রোডে চায়ের দোকান ছিল বাবু পালের। সারা দেশের করোনা ভাইরাসের থাবা বসানোয় দেশ জুড়ে লকডাউন শুরু হয়েছে।লকডাউনের কারনে দোকানপাট বন্ধ। তৈরী চায়ের ব্যবসা করে যেটুকু অর্থ জমেছিল কয়েকদিন বসে খেয়ে সেই অর্থ শেষ হয়ে গিয়েছে। আর্থিক অনটনের কারণে তাঁর দশ মাসের সন্তানের জন্য যে বেবি ফুড আনতে হত সেই বেবি ফুড আনা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।দু’বেলা দু’মুঠো ভাত মুখে জোগার করতে পারছিলেন না। স্ত্রী এবং একমাত্র সন্তানকে কিভাবে বাঁচিয়ে রাখবেন এই চিন্তাতেই রাতের ঘুম উঠে গিয়েছিল বাবু পালের।
নিরুপায় হয়ে চা তৈরী করে মোবাইলে বিক্রি করার ভাবনা আসে। কিন্তু চায়ের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ, সেটাই বা কোথায় পাবেন? বাধ্য হয়েই বন্ধুর কাছ থেকে পঞ্চাশ টাকা ধার নিয়ে এক প্যাকেট দুধ ২০ টাকা, ১০০ গ্রাম চা এবং ২৫ টি কাগজের গ্লাস কিনে আনেন। বাড়িতেই চা বানিয়ে একটি ফ্লাক্সে ঢেলে পরিচিতদের কাছে গিয়ে চা বিক্রি শুরু করেন। চায়ের দোকান করার সুবাদে তাঁর একটা পরিচিতি ছিলই। চা পিপাশু মানুষ, হাতের কাছে তৈরী চায়ের ভাড় পেয়ে বেজায় খুশী। প্রথমদিকে একটি ফ্লাক্সে চা নিয়ে বিক্রি শুরু করেছিলেন। এলাকায় জানাজানি হতেই চায়ের চাহিদা বেড়ে বেড়ে গিয়েছে। বাবু পালের ফোন নম্বর আগে থেকেই অনেকের কাছেই ছিল। এখন এই মোবাইল চায়ের ব্যবসা শুরু করতে নতুন বেশ কিছু মানুষের কাছে তাঁর মোবাইল নম্বর দিয়েছেন। চা পিপাশু মানুষদের চা খেতে ইচ্ছা করলেই ফোন করে ডেকে নিচ্ছেন। ফোন করা মাত্রই সাইকেল নিয়ে, চা নিয়ে হাজির হয়ে যাচ্ছেন বাবু।
দিন পাঁচেক হল, এই ব্যবসা শুরু করলেও প্রতিদিন চায়ের চাহিদা বাড়ছে। এখন তিনটি ফ্লাক্স ভর্তি করে নিয়ে চা বিক্রি করছেন তিনি। ফ্লাক্সের চা শেষ হলেই আবার বাড়িতে গিয়ে চা তৈরী করে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন। চায়ের সমস্ত দোকান বন্ধ থাকায় সকালের দিকে মুদির দোকান থেকে সব্জীর দোকানদের চা সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখন দিনে ১০০ থেকে ১৫০ কাপ চা বিক্রি করছেন বাবু। নতুন এই ব্যবসায় তার অন্ধকারের দিন অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। মোবাইল চায়ের ব্যবসা করে সন্তানের মুখে বেবি ফুড তুলে দিতে পেরেছে। সংসারে যে অভাব দেখা দিয়েছিল তারও অনেকটাই পরিবর্তন ঘটেছে। পুলক দে নামে বাসিন্দা জানালেন, রায়গঞ্জ শহরে সমস্ত চায়ের দোকান বন্ধ। ফলে চায়ের নেশা পেলে কোথাও চা পাওয়া যাচ্ছে না। বাবু চায়ের ব্যবসা শুরু করার পর সেই সমস্যার সমাধান ঘটেছে। চা খেতে ইচ্ছা করলেই ফোন করে ডেকে নিচ্ছেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই বাবু এসে চা দিয়ে যাচ্ছে। শহরে দোকান বন্ধ থাকলেও চায়ের সমস্যা বাবু মিটিয়ে দিয়েছে ৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Lockdown, Tea, Tea sellar