শিলিগুড়ি: গত সপ্তাহেই অবৈধভাবে বালি চুরি করতে গিয়ে বালাসন নদীতে মাটি ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল তিন শিশুর। যার জেরে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়তে হয় তৃণমূলকে। অভিযোগ, বহুবার জানিয়েও বালি সমস্যার কোনও সুরাহা মেলেনি। এলাকাবাসীর দাবি, প্রশাসনিক ব্যর্থতার জেরেই ৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে শিলিগুড়ির মহকুমা শাসকের কাছে স্মারকলিপিও জমা দেয় বামেরা। বিধানসভায় সরব হন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। অবশেষে নড়েচড়ে বসল পুলিশ ও প্রশাসন।
শিলিগুড়ির বালাসন নদী থেকে বেআইনিভাবে বালি চুরি বন্ধে নয়া ব্যবস্থা নিতে চলেছে প্রশাসন। এখন সব নদীঘাটই বন্ধ রয়েছে। নতুন করে লিজ নবীকরণ হয়নি। এই সুযোগে প্রশাসনকে অন্ধকারে রেখে দেদারে নদী থেকে বালি,পাথর চুরির অভিযোগ ছিলই। মাঝেমধ্যে পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তারা অভিযান চালিয়ে লরি আটক করলেও আবার যে কে সেই। সরকারি বিধিকে তোয়াক্কা না করেই রাতের অন্ধকারে বালাসন নদী থেলে বালি চুরি করতে গিয়ে নামে বিপদ। নদী পারের মাটি ধসে মৃত্যু হয় তিন শিশুর। যা নিয়ে কম রাজনৈতিক জলঘোলা হয়নি।
শাসকের মদতেই বেআইনি কারবার চলছিল বলে অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। মেয়র গৌতম দেব ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পরেই জানিয়েছিলেন কড়া হাতে এই বালি পাচার সমস্যার মোকাবিলা করা হবে। এরপরেই দ্রুত ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক, বিডিও ও পুলিশ কর্তারা বৈঠকে বসে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বালাসনের বালি চুরি বন্ধে দু'প্রান্তে দুটি চেকপোস্ট করবে প্রশাসন।
এই চেকপোস্ট দুটিতে একজন পুলিশ আধিকারিক, দু'জন কনস্টেবল এবং একজন রেভেনিউ অফিসার থাকবেন। ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকবে এই চেকপোস্ট। একটি হচ্ছে ফাঁসিদেওয়া মোড়ে, অন্যটি খাপরাইল রোডে। এলাকা পরিদর্শনের পর মাটিগাড়ার বিডিও শ্রীবাস বিশ্বাস জানান, এছাড়াও মোবাইল ভ্যানের টহলদারি ব্যবস্থা থাকছে। মাটিগাড়ার বিএলএলআরও দীপেন লামা জানান, অবৈধভাবে বালি, পাথর চুরি করা হলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।
প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও বিরোধীদের প্রশ্ন, চেকপোস্ট আবার নিছক লোক দেখানো না হয়ে দাঁড়ায়। কারণ ৩ শিশুর তরতাজা প্রাণ চলে যাওয়ার পরেও শাসকের মদতে অবাধ দৌরাত্ম্য লক্ষ্য করা গিয়েছে বালি মাফিয়ার।
পার্থপ্রতিম সরকার
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।