#জলপাইগুড়ি: শিশু পাচার কাণ্ডে এবার গ্রেফতার জলপাইগুড়ির শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সাস্মিতা ঘোষ। শিশু পাচারে মূল অভিযুক্ত চন্দনা চক্রবর্তীর থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হল সাস্মিতাকে। গত কয়েকদিন ধরেই দফায় দফায় জেরা করা হয়েছিল সাস্মিতাকে।
এর আগেই গ্রেফতার করা হয় সাস্মিতার স্বামী দার্জিলিংয়ের শিশু সুরক্ষা আধিকারিক মৃণাল ঘোষকে। চন্দনা চক্রবর্তীকে জেরায় শিশুপাচারে মৃণাল-সাস্মিতার যোগের বিষয়টি উঠে আসে। শিশু সুরক্ষা আধিকারিক হিসাবে গাফিলতির জন্য শো-কজও করা হয় সাস্মিতাকে। চন্দনার শিশু পাচার চক্রে সাস্মিতা যোগ খতিয়ে দেখতে জেরা করা হবে সাস্মিতাকে। জলপাইগুড়ির এই DCPO-কে রবিবার সাসপেন্ড করা হয়েছে।
অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সচিবকে সরানো হল। সরানো হল পৃথা সরকারকে। অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলি। তিনি একসময় জলপাইগুড়ির ডিএম ছিলেন। শিশু পাচারের ঘটনার জেরেই বদলি? চন্দনার হোমের বাড়বাড়ন্ত সেই সময়। সেই কারণেই বাড়ছে জল্পনা। প্রশাসনের কোনও বক্তব্য জানা যায়নি। পৃথা সরকার হলেন সল্টলেকের কমিশনার। তাঁর জায়গায় এলেন সৌমিত্র মোহন। সৌমিত্র মোহন ছিলেন বর্ধমানের ডিএম।
মৃণাল ও আরেক ধৃত চিকিৎসক দেবাশিস চন্দের বিরুদ্ধে শিশুপাচারের যোগ আরও স্পষ্ট হয়েছে। ৭০-টির মধ্যে ১৭-টি শিশুপাচারে এই দু’জনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। চন্দনার হোমের প্রাক্তন কর্মী রুনু চক্রবর্তীকে জেরা করে তৈরি হচ্ছে পাচার হওয়া শিশুদের ক্রেতাদের তালিকা।
জলপাইগুড়ি শিশুপাচারের তদন্তে নেমে অভিযুক্তদের হদিশ পেয়েছে সিআইডি। এবার পাচার হওয়া শিশুদের ক্রেতাদের তালিকা তৈরি করতে শুরু করেছে সিআইডি। তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ২০১৪-১৫ সালে বিমলা শিশুগৃহ থেকে ১৭টি শিশুকে পাচার করেছিলেন হোমের কর্ণধার চন্দনা চক্রবর্তী। শিশু বিক্রি করতে সরাসরি সাহায্য নেওয়া করেছিলেন দার্জিলিঙের ডিসিপিও মৃণাল ঘোষ। মৃণালের নির্দেশেই শিশুপাচারে সাহায্য করেন জেলার শিশুকল্যাণ কমিটি সদস্য-চিকিৎসক দেবাশিস চন্দ। আগে মৃণাল ও চন্দনা দু'জনেই এনজেপির কনসার্ন হোমের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ৷
জেরায় ধৃতেরা পাচারচক্রে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে সিআইডি সূত্রে খবর। তদন্তের পরবর্তী ধাপে বেআইনি ভাবে দত্তক নেওয়া ১৭টি পরিবারকে খুঁজছেন গোয়েন্দারা। সেই লক্ষ্যেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে জলপাইগুড়ির ডিসিপিও সাস্মিতা ঘোষের ভূমিকা। শিশুপাচারে নাম জড়ানোয় যাঁকে রবিবারই সাসপেন্ড করেন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক রচনা ভগৎ। এদিন সাস্মিতাকে ফের দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় চন্দনার হোমের প্রাক্তন কর্মী রুনু চক্রবর্তীকেও। এই দু'জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই পাচার হওয়া ১৭টি শিশুর ঠিকানার খোঁজ চালাচ্ছে সিআইডি।