#মালদহ: বিধানসভা ভোটের আগে গোটা রাজ্যে শাসক-বিরোধী তরজা চরমে। সভা, সমাবেশ থেকে শুরু করে সম্প্রতি বিধানসভার অন্দরেও একে অন্যকে সরাসরি আক্রমণ করেছেন শাসক ও বিরোধী শিবিরের বিধায়করা। সেখানে একেবারেই "ভিন্ন" ছবি ধরা পড়ল শুক্রবার মালদহ জেলা পরিষদের বাজেট বৈঠকে। তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের বাজেট পাশ করাতে বৈঠকে হাজির কংগ্রেস, এমনকি বিজেপির বিধায়করাও। যুক্তি হিসেবে, বিধায়করা বললেন জেলার উন্নয়নের প্রসঙ্গ।
মালদহ জেলা পরিষদে তৃণমূলের ক্ষমতা দখলে "সন্ত্রাসের" অভিযোগ তুলেছিল বিরোধী কংগ্রেস ও বিজেপি। এমনকি উঠেছিল "ভোট লুঠের"অভিযোগ। অথচ, এই দুই দলের একাধিক বিধায়ক দল বেঁধে হাজির তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের বাজেট বৈঠকে। শুধু তাই নয়, বয়কট বা সমালোচনা দূরের কথা। একযোগে বাজেট প্রস্তাবকে সমর্থনও করলেন তাঁরা। এমনকি নিজেদের মধ্যে বিরোধী শিবিরে থাকা বিধায়কদের হাসি-মশকরার মতো সদর্থক ছবিও দেখা গেল।
মালদহ জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য সংখ্যা ৩৮। নিয়ম অনুযায়ী জেলার ১২ জন বিধায়ক পদাধিকার বলে জেলা পরিষদের বাজেটে আমন্ত্রিত হন। শুক্রবার মালদহ জেলা পরিষদের অতিথিশালায় জেলার ১২ জন বিধায়কের মধ্যে সাত জন উপস্থিত হন। এর মধ্যে চারজন কংগ্রেস বিধায়ক। দুজন বিজেপির বিধায়ক। এছাড়া তৃণমূল থেকে সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দেওয়া গাজোল এর বিধায়ক দিপালী বিশ্বাসও হাজির ছিলেন। তবে গরহাজির ছিলেন তৃণমূলেরই তিন বিধায়ক এবং দুই কংগ্রেস বিধায়ক। তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের বাজেটে যোগদান প্রসঙ্গে বিধায়করা অবশ্য বললেন জেলার উন্নয়নের কথা ভেবেই বাজেট প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন তাঁরা।
মালদহ জেলা পরিষদের তৃণমূল সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মন্ডল দলবদল করতে পারেন বলে জেলার রাজনীতিতে বেশ কিছুদিন ধরেই নানা জল্পনা চলছে। তবে, রাজনৈতিক মহলের মতে এদিন বিরোধীদের পাশে নিয়ে বাজেট পাস করিয়ে কার্যত মাস্টার স্টোক দিয়েছেন মালদহের সভাধিপতি। তিনি বলেন, রাজনীতির লড়াই হবে মাঠে-ময়দানে। কিন্ত, উন্নয়নের প্রশ্নে মালদহে জনপ্রতিনিধিরা সকলেই এক। এদিনের বাজেট বৈঠকে একথা প্রমাণিত হয়েছে। মালদহ জেলা পরিষদে এদিন ৩৮১ কোটি ৬৮ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকার বাজেট পেশ হয়। বাজেটে গ্রামীণ সড়ক, পানীয় জল, স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নয়নে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।