#ইসলামপুর: উত্তর দিনাজপুরের ইতিহাসে কলঙ্কময় একটি ঘটনা গাইসালের ট্রেন দুর্ঘটনা । আজ প্রায় ২১ বছর আগে ১৯৯৯ সালের ২ আগষ্ট রাত ১.৪৫ মিনিটে হঠাৎ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠেছিল গাইসালের বিস্তীর্ণ এলাকা। চারিদিকে আর্তনাদ, ‘বাঁচাও ,বাঁচাও’। চারদিক থেকে মানুষ ছুটে এসে দেখলেন দু’দিক থেকে আসা দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে বগিগুলি দুমড়ে মুচড়ে পড়ে আছে। ব্রহ্মপুত্র মেল ও অবধ– আসাম এক্সপ্রেস, এই ট্রেন দুটি দু’দিক থেকে এসে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটায়, ঘটে এই দুর্ঘটনা।
সেই ঘটনায় সরকারি মতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৩০০ জন। বেসরকারি মতে এই সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি। সকাল হওয়ার পর মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল গাইসাল। লাশের পাহাড় ছিল চারিদিকে। পড়েছিল ছিন্নভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। আকাশ জুড়ে ছিল স্বজনহারাদের কান্না, আহতদের আর্তনাদ। উদ্ধারকাজে নেমেছিল বিএসএফ, পুলিশ, সেনা। হাত লাগিয়েছিলেন গাইসালের স্থানীয় মানুষজনও। সেই করুণ দৃশ্য আজও ভোলেননি উত্তর দিনাজপুর জেলা–সহ সারা ভারতবাসী। গাইসালবাসীর একটাই কামনা, আর যেন দ্বিতীয় গাইসাল না হয়! প্রতিবার ২ আগস্ট গাইসালে ফিরে আসে ২১ বছর আগের বিষাদ। তৎকালীন কেন্দ্র সরকার এই দুর্ঘটনাকে স্বাধীনতা পরবর্তী সবথেকে বড় রেল দুর্ঘটনা বলে স্বীকার করেছিল। দুর্ঘটনার দায় স্বীকার করে তৎকালীন রেল মন্ত্রী নীতীশ কুমার পদত্যাগ করেছিলেন। সবার প্রথম এই সংবাদ আমাদের চ্যানেলেই দেখানো হয়েছিল।
২১ বছরের সেই আতঙ্ক আজও তাড়া করে বেড়ায় গাইসালের ছোট চায়ের দোকান নরেন দাসের। সেই ঘটনার পূনরাবৃত্তি করতে বললেই আজও তাঁর চোখে জল আসে। সেদিন ভয়ে তার ধারে কাছেই পৌঁছতেই পারেননি নরেনবাবু। শুধু মানুষের আর্তনাদ শুনেই তাঁকে থাকতে হয়েছে। পরবর্তীতে একের পর এক মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। দাঁড়িয়ে থেকে দেখেছেন মৃতদেহ। একে একে বছর পেরিয়েছে ২১ টা। সেই দিনটার কথা নরেনবাবুকে বলতে বলতেই অর্নগল বলে ফেলছেন। বলতে বলতেই তার গলা ভারী হয়ে যায়। তাঁর একটাই কামনা, আর যেন কোথাও গাইসাল না হয়। রেলকর্মী সুনীল দাস জানিয়েছেন, সেই রাতে হাল্কা বৃষ্টি হচ্ছিল। আচমকা বিকট শব্দে বাইরে বেরিয়ে দুটি ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনা দেখতে পান। অন্ধকারের মধ্যে যাত্রীদের আর্তনাদে সেখানে পৌঁছান।
Uttam Paul
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Gaisal, Train Accident