বসিরহাট: ইচ্ছামতির করাল গ্রাসে আস্ত একটি গ্রাম বাংলাদেশের ভূখণ্ডে। জমির দলিল স্মৃতি আকড়ে সীমান্তের গ্রামের মানুষ বাস্তু ভিটে ফিরে পাওয়ার আশায় ইছামতীর দিকে তাকিয়ে দিন গুনছেন।
নদীর একুল ভাঙে ওকুল গড়ে ভাটিয়ালি শিল্পীদের গলায় বারবার উঠে এসেছে আর তার বাস্তব ছবি দেখা গেল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট এক নম্বর ব্লকের শাকচুড়া বাগুন্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতের তিনটি মৌজার সংযোগস্থলে। গোয়ালাটি ও বাগুন্ডি গ্রামের একাংশ ইছামতীর ভাঙ্গনে তলিয়ে গেছে। প্রায় তিন কিলোমিটার গ্রামের পরিধি, ৩০০ পরিবার প্রায় ১,৫০০ হাজার মানুষ বসবাস করত। সেইসঙ্গে বাস্তুভিটে ঘরবাড়ি চাষের জমি সবটাই চলে গেছে ওপার বাংলায় তথা বাংলাদেশে। প্রায় ৫০ বছর ধরে নদীর পাড়ের বাসিন্দারা বারবার ইছামতি নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে। আর প্রাকৃতিক বিপর্যয় কথা মনে করলেই বারবার ইছামতি নদী ভাঙ্গনের কথা উঠে আসে সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় লেখনীতে।
এই নদী আজ তার গতিপথ হারাচ্ছে যার কারণে ভাঙনের কবলে পড়তে হচ্ছে গ্রামকে। গোয়ালাটি গ্রামের প্রাচীন কয়েকটি পরিবার আজও হারানো নিজের বাস্তুভিটের জমির দলিল স্মৃতি আঁকড়ে রেখে গ্রাম ফিরে পাওয়ার আশায় দিন গুনছে। তারা চাইছেন জমির দলিল থাকলেও আস্ত একটি গ্রাম চলে গেছে বাংলাদেশে। তারা দ্রুত তাদের জমি ও গ্রাম ফিরে পেতে পঞ্চায়েতের পাশাপাশি বারবার জানিয়েছেন প্রশাসনকেও। কিন্তু নদী আপন বেগে চলেছে ভাঙন ধ্বংসের স্মৃতি আকড়ে দেখে আজও সীমান্তে পারের মানুষ। ওপার বাংলার দিকে তাকিয়ে থাকে, কবে তাদের গ্রাম আবার ফিরে পাবে।
শাকচুড়া বাগুন্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আরিফা বিবি ও তাঁর প্রতিনিধি শেখ শরিফুল জানান, পুরো বিষয়টা আমরা বিএলআর-কেজানিয়েছি। কোনদিন নদীর চর জাগলে আমরা তাদের জমি ফেরত দিয়ে দেবো। ইতিমধ্যে সরকারি খাস জমি তাদেরকে দিয়ে বসবাসের জায়গা করেছি। প্রাচীন বহুবসতি কেন্দ্রের বাসস্থান হারিয়ে অনেকে অন্যত্র চলে গেছে আবার কেউ ওপার বাংলায় চলে গেছে। আমরা চাই তাদের গ্রাম যেন ফিরে পায় পাশাপাশি চাষের জমিতে আবার ফসল ফলাতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে গোটা গ্রাম যেখানে বাংলাদেশে চলে গেছে, তারা কী আর ফিরে পাবে! সীমান্ত পারের বাসিন্দারা ওপারে বাংলার দিকে তাকিয়ে রয়েছে, কবে তারা গ্রাম আবার ফিরে পাবে। পাওয়া না পাওয়ার মধ্যে রয়েছে একরাশ হতাশা আবেগ।
জুলফিকার মোল্লা
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Basirhat