হোম /খবর /দক্ষিণবঙ্গ /
তেষ্টায় বুক ফেটে যাচ্ছিল, তাও মাকে এতটুকু জল দেয়নি কেউ! জানেন তারপর কী করে ছেলে?

North 24 Parganas News: তেষ্টায় বুক ফেটে যাচ্ছিল, তা-ও মা-কে একফোঁটা জল দেয়নি কেউ! এখন তৃষ্ণার্তদের জল খাইয়েই তাঁদের মাঝে মা-কে খোঁজে ছেলে

তৃষ্ণার্তদের জলপান (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)

তৃষ্ণার্তদের জলপান (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)

জল চেয়ে পায়নি মা, ছোটবেলায় ঘটা ঐ স্মৃতি বদলে দিয়েছে তার দৃষ্টিভঙ্গি। ১৫ বছর ধরে তৃষ্ণার্ত মানুষদের জলপান করিয়ে আসছেন সমীর।

  • Hyperlocal
  • Last Updated :
  • Share this:

    উত্তর ২৪ পরগনা: তখনও এমন গরম৷ ঠিক এমনি রোদ৷ তেষ্টায় বুক ফেটে যাওয়ার মতো রোদ৷ সেই রোদেও জল চেয়ে জল পায়নি মা৷ মায়ের সেই দুর্বিসহ কষ্টের দৃশ্য এখনও দগদগে স্মৃতি৷ সেই থেকেই শুরু৷ ফলের দোকান চালিয়ে সামান্য রোজগার৷ কিন্তু, ভাল কাজ করতে হলে ভুড়ি ভুড়ি টাকা রোজগার করতে লাগে না, লাগে শুধুমাত্র সদিচ্ছার৷ একটুখানি মানবিকতার৷ সেই সদিচ্ছা থেকেই গত ১৫ বছর ধরে রোদে-তাতে পুড়ে যাওয়া তৃষ্ণার্ত মানুষদের জল খাইয়ে তৃষ্ণা নিবারণ করছেন সমীর সেন৷ এই প্রতিবেদনে শোনা যাক সেই সমীরেরই গল্প৷

    বছর পনের আগের কথা৷ সেই সময়ে একটা ঘটনায় আজীবনের মতো দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয় সমীরের৷ তখন সমীর অনেকটাই ছোট৷ মায়ের পাশে খুদে পায়ে হেঁটে হেঁটে স্কুল যাচ্ছিল৷ অনেক ক্ষণ ধরেই বুঝতে পারছিল, রোদে মায়ের বড্ড কষ্ট হচ্ছে৷ কিছুক্ষণ পর থেকে মা-ও বলতে থাকে, ‘‘গলা শুকিয়ে গেছে৷ একটু জল খেতে হবে৷ একটু জল৷’’

    আরও পড়ুন:প্রচণ্ড গরমে নাজেহাল! দেওয়া হচ্ছে ORS, সঙ্গে পাখার হাওয়াও খাচ্ছে বাঘ মামা, দেখুন সেই ভিডিও

    কাছেই একটা দোকানও দেখতে পেয়ে যায় সমীর ও তার মা৷ সেখানেই একটু খাওয়ার জল চান তিনি৷ কিন্তু, অদ্ভুত রূঢ় ভাবে সমীরের মা-কে সেদিন জল দিতে চাননি ওই দোকানদার৷ তেষ্টায় তখন তাঁর নাজেহাল অবস্থা৷ জল না পেয়ে মায়ের সেদিনের সেই কষ্ট আর দোকানদারের অসংবেদনশীলতা সমীর কোনওদিনও ভুলতে পারেনি৷ সেই থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, গরম কালে প্রত্যেক তৃষ্ণার্ত মানুষকে সাধ্যমতো অন্তত জলটুকু খাওয়াবে সে৷

    সেই শুরু৷ তারপর থেকে গত ১৫ বছর ধরে সেই কাজই করে আসছে সমীর৷ উত্তর ২৪ পরগনার ছোট্ট শহর মছলন্দপুর স্টেশন থেকে মাত্র মিনিট সাতেকের দূরত্ব৷ তার কাছেই রয়েছে একটি ছোট্ট ফলের দোকান। তার সামনেই সমীরের জলসত্র৷ জলের সঙ্গে নিজের সাধ্যমতো গুড় বাতাসাও দেন সমীর৷ তিনি বলেন, ‘‘মায়ের মতো কত মানুষ গরম কালে তৃষ্ণার্ত হয়ে থাকেন। পথ চলতি তৃষ্ণার্ত মানুষদের জল খাইয়েই আমি মাকে খুঁজে পাই।’’

    আরও পড়ুন: উরুর মধ্য়ে সেলোটেপ দিয়ে আটকানো ওটা কী! দেখে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের, অভিনব কায়দায় পাচার

    ‘সেবাই মানুষের পরম ধর্ম’, এই কথাকে পাথেয় করেই প্রখর তাপপ্রবাহের মাঝে তৃষ্ণার্ত মানুষদের জল পান করিয়ে যাচ্ছেন সমীর সেন। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে আজ ভাইরাল তিনিও। অনেকেই তাঁর এই কাজকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন, দিচ্ছেন আশীর্বাদও।

    Rudra Narayan Roy

    First published:

    Tags: North 24 pargana