লখনউ: লাল চেলি পরা নববধূর পা পড়ে না উঠোনে। বহু দিন হয়ে গেল এই গ্রামে কোনও নতুন বউ এসে দাঁড়ায়নি। বিয়ের সানাই বাজেনি কোনও যুবকের পরিবারে।
উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির একটি গ্রামের ঘটনা। কিন্তু কেন ওই গ্রামের কোনও যুবকের হাতে কন্যা সম্প্রদান করতে চান না মেয়ের বাবারা! আসল ঘটনার কথা জানলে হতবাক হয়ে যাবে গোটা দেশের মানুষ।
জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির একটি গ্রামে এমনই পরিস্থিতি যে স্থানীয় যুবকেরা বিয়ে করতে পারছেন না। বলা ভাল তাঁদের বিয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কোনও পরিবারই ওই গ্রামে নিজেদের মেয়ের বিয়ে দিতে রাজি নয়।
আরও পড়ুন: ব্যবসাগুলো যেন কলকাতার জন্যই তৈরি, কম টাকায় বিপুল লাভ, ভেবে দেখবেন না কি?
বিয়ে না হওয়ার কারণ বিদ্যুৎ।
হ্যাঁ, স্বাধীনতার ৭৬ বছর পরেও ঝাঁসির কাটরা এলাকার পুরাইনা গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছোয়নি। বিদ্যুতের অভাবে এই গ্রাম এখনও অনেকখানি পিছিয়ে রয়েছে। তাই এই গ্রামে কেউ নিজের মেয়ের বিয়ে দিতে চান না। শুধু বিদ্যুতের অভাবে নয়, সেই সঙ্গে এখানে রয়েছে জলের সমস্যাও। বিদ্যুতের অভাবেই এখানে নলবাহিত জল আসে না। নিত্য প্রয়োজনীয় জলটুকু নিয়ে আসতে অনেক দূর যেতে হয় গ্রামের মহিলাদের। কষ্টের শেষ নেই।
পুরাইনা গ্রামের বাসিন্দা হীরাবাই বলেন, ‘বিদ্যুৎ আসেনি আজও। আর বিদ্যুৎ সংযোগ নেই বলেই গ্রামে জলের ব্যবস্থাও নেই। অন্য মৌলিক সুবিধাগুলি থেকেও আমরা একেবারে বঞ্চিত।’
সূর্য ডোবার পর এলাকার বাসিন্দারা লণ্ঠন জ্বালিয়েই কাজ সারেন। এদিকে সরকারের তরফ থেকে কেরোসিন দেওয়ার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাতে বিপত্তি বেড়েছে পুরাইনা গ্রামের বাসিন্দাদের। এখন তাঁরা ভোজ্য তেল পুড়িয়ে আলো জ্বালেন। অনেকে ডিজেল দিয়ে বাতি জ্বালাতে বাধ্য হন। স্থানীয় মহিলাদের মধ্যে ক্ষোভ সব থেকে বেশি। তাঁরা দাবি করেন দিনের অর্ধেকটা সময় চলে যায় জল সংগ্রহ করতে। আর বিকেল ৫টার পরই ঘরে নেমে আসে অন্ধকার। তখন প্রায় কোনও কাজই করা যায় না। এদিকে বাইরের দুনিয়া এগিয়ে গিয়েছে অনেকখানি। এই গ্রামের বাসিন্দাদের জীবনে স্বাভাবিক কাজকর্ম নিয়মিত ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যুৎ ও জলের সমস্যায় ভেঙেছে সম্পর্কও—
স্থানীয় বাসিন্দা কবির নামের এক যুবক জানান, যখনই কোনও ব্যক্তি তাঁর মেয়ের সম্বন্ধ নিয়ে গ্রামে আসেন, তখনই এখানে বিদ্যুৎ ও জলের সমস্যার দিকে তাঁর নজর পড়ে। এমন গ্রামে মেয়ের বিয়ে দিতে রাজি হন না কেউ। যে কোনও মানুষ সাফ জানিয়ে দেন, নিজের মেয়েকে এমন গ্রামে পাঠাতে পারবেন না যেখানে বিদ্যুৎ নেই, জল পাওয়া যায় না।
এদিকে গ্রামপ্রধানের দাবি, বিদ্যুৎ ও জলের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান হবে বলে তাঁর আশ্বাস।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Marriage