#জেনিভা: বিশ্ববাসীকে আশার বাণী শোনাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ৷ শুক্রবার সকলের উদ্দেশ্যে হু প্রধান ঘোষণা করেন, করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের পরীক্ষার ফলাফল ইতিবাচক হওয়ার অর্থ বিশ্ববাসী মহামারী সমাপ্তির স্বপ্ন দেখতে শুরু করতে পারেন ৷ তিনি এও বলেন যে খেয়াল রাখতে হবে ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে ধনী ও শক্তিশালী দেশগুলি যেন দরিদ্র দেশগুলিকে পদদলিত না করে ৷
ইউএন জেনারেল অ্যাসেমব্লির প্রথম উচ্চ-স্তরের অধিবেশনে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর টেড্রস অ্যাধনম ঘেব্রেয়েসাস মহামারী সম্পর্কে সতর্ক করেন ৷ তিনি বলেন, এই মহামারী মানবতার সেরা থেকে নিকৃষ্টতম, সব রূপ দেখিয়েছে৷
সংক্রমণ এবং মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে টেড্রস কোনও দেশের নাম না করে বলেন যে, যেখানে বিজ্ঞান ষড়যন্ত্র দ্বারা নিমজ্জিত, যেখানে সংহতি স্থাপন সম্ভব হয় না ৷ সেখানে ভাইরাস আরও ছড়িয়ে পড়ে। তিনি উচ্চ-স্তরের বৈঠকে ভার্চুয়াল ভাষণে হুঁশিয়ারি দেন, এই ভ্যাকসিন গোড়ায় থাকা সমস্যাগুলি যেমন দারিদ্র্য, ক্ষুধা, বর্ণবৈষম্য এ গুলিকে মোকাবেলা করবে না ৷ তবে মহামারীর অবসান ঘটলে তা মোকাবেলা করতে হবে।
ভ্যাকসিনগুলি সম্পর্কে টেড্রস বলেছিলেন, টানেলের শেষে আলো ক্রমশ উজ্জ্বল হয়ে উঠছে, তবে ভ্যাকসিনগুলি অবশ্যই বিশ্বজুড়ে পণ্য হিসাবে সমানভাবে ভাগ করতে হবে। বেসরকারী পণ্য হিসাবে নয়৷ তাতে অসাম্যতা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং কিছু মানুষ আরও পিছিয়ে পড়বেন ৷ তিনি বলেন যে, ডাব্লুএইচও-এর অ্যাক্ট-এক্সিলারেটর প্রোগ্রামটি হল দ্রুত সঠিকভাবে ভ্যাকসিনগুলি বিকাশ এবং বিতরণ করার জন্য ৷
তিনি আরও বলেন যে, ভ্যাকসিনগুলি সংগ্রহ ও সরবরাহের জন্য অবিলম্বে ৪.৩ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন এবং ২০২১ সালের জন্য আরও ২৩.৯ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। বৃহস্পতিবার ইউএন সেক্রেটারি-জেনারেল আন্তোনিও গুতেরেস জেনারেল অ্যাসেমব্লির অধিবেশন উদ্বোধনের সময় অ্যাক্টি-এক্সিলারেটরকে অর্থ প্রদানের জন্য আবেদন করেন ৷ যে দেশগুলির ক্ষমতা আছে তাদের থেকে আরও বেশি বিনিয়োগের হার আশা করেন বলেও জানান তিনি৷
আমেরিকান শিশু সংস্থা ইউনিসেফের প্রধান হেনরিটা বলেন, দরিদ্র দেশগুলি যখন ভ্যাকসিন কেনার চেষ্টা করতে শুরু করে তখন নয় পাওয়া যায়নি, নায়তো খুব উচ্চমূল্যের ছিল৷
ইউনিসেফ সাধারণত বছরে ২ বিলিয়ন ভ্যাকসিন ডোজ বিতরণ করে এবং একবার এটি কভিড-১৯ ভ্যাকসিনটি হাতে পেলে তার সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। তাই সকলের হাত মেলানো প্রয়োজন ৷
টেড্রস বলেছেন, গোটা বিশ্বে প্রতি বছর স্বাস্থ্যের জন্য ব্যয় হয় ৭.৫ ট্রিলিয়ন ডলার, যা গ্লোবাল জিডিপির প্রায় ১০ শতাংশ৷ তবে এই অর্থের বেশিরভাগটাই ধনী দেশগুলিতে চিকিত্সাক্ষেত্রে ব্যয় করা হয়৷ তিনি বলেন, স্বাস্থ্যের দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যকে তাঁরা কীভাবে বিবেচনা করবেন সে বিষয়ে পুনর্বিবেচনা দরকার।
টেড্রাস বলেছেন, গোটা বিশ্ব যদি এই মাত্রার অন্য কোনও সঙ্কট এড়াতে চায় তাহলে মৌলিক কিছু দিক যেমন প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবায় বিনিয়োগ জরুরী ৷ দ্রুত প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার ভিত্তিকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে৷
Written by: Simli Dasgupta