#শ্রীনগর: প্রচণ্ড তুষারপাত। বিস্তীর্ণ প্রান্তর বরফের চাদরে ঢাকা। রাস্তাঘাটও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সেনার গাড়িতেই সন্তানের জন্ম দিলেন অন্তঃসত্ত্বা। জম্মু-কাশ্মীরের কুপওয়ারার ঘটনা। আপাতত মা ও ছেলে দু'জনেই সুস্থ রয়েছে। কুপওয়ারার কালারুস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তারা।
সেনার মুখপাত্র জানিয়েছেন, ১ ফেব্রুয়ারি ঘটনাটি ঘটে। ওই দিন সকালে সেনাদের কাছে এক আশাকর্মীর ফোন আসে। আশাকর্মী জানান, এক অন্তঃসত্ত্বার খুব খারাপ পরিস্থিতি। প্রবল তুষারপাতে রাস্তাঘাট বন্ধ থাকায় অ্যাম্বুলেন্সও আসতে পারছে না। এর পর তড়িঘড়ি ওষুধপত্র, মেডিকেল ইক্যুইপমেন্ট নিয়ে কুপওয়ারা জেলার নারিকুটের দিকে রওনা দেয় সেনার গাড়ি। পরে অন্তঃসত্ত্বাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু হাসপাতাল যাওয়ার পথে ক্রমশ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। এদিকে বরফে ঢাকা রাস্তা ঠেলে গাড়ি এগোতেও সময় লাগছিল। এই পরিস্থিতিতে সেনাদের রাস্তার পাশেই গাড়ি পার্ক করার আবেদন জানায় আশাকর্মীরা। এর পর সেনার মেডিকেল টিমের সহযোগিতায় গাড়ির মধ্যে সন্তানের জন্ম দেন ওই অন্তঃসত্ত্বা।
জিপসির মধ্য থেকে সদ্যোজাতর কান্নার শব্দ আসতেই সবার মুখে হাসি ফুটে ওঠে। পরে মা ও সন্তান দু'জনকেই কুপওয়ারার কালারুস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আপাতত দু'জনেই সুস্থ রয়েছে। ঘটনায় আশাকর্মী-সহ অন্তঃসত্ত্বার পরিবারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কালারুস কম্পানির কমান্ডার। সেনা জওয়ানদের এই পরিষেবার জন্য কৃতজ্ঞ অন্তঃসত্ত্বার পরিবারও।
প্রসঙ্গত, এই বছর ৫ জানুয়ারিও একই রকম ঘটনা ঘটেছিল। উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলায় সেবার এক অন্তঃসত্ত্বাকে কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন সেনা জওয়ানরা। হঠাৎই সেনা জওয়ানদের কাছে ওই অন্তঃসত্ত্বার স্বামীর ফোন আসে। জানা যায়, ফারকিয়ান গ্রামে আটকে রয়েছেন তাঁরা। তাঁর স্ত্রীর অবস্থা গুরুতর। প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। যেভাবেই হোক দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। এর পর তড়িঘড়ি সেনার নার্সিং ডিপার্টমেন্টের লোকজনকে নিয়ে ঘটনাস্থানে পৌঁছায় কয়েকজন জওয়ান। সঙ্গে পর্যাপ্ত ওষুধপত্রও নিয়ে যাওয়া হয়। পরে প্রায় দুই কিলোমিটার বরফে ঢাকা রাস্তা চিরে ওই অন্তঃসত্ত্বাকে নিয়ে হাঁটতে শুরু করেন জওয়ানরা। শেষমেশ মূল রাস্তায় পৌঁছে যান সকলে।
যাই হোক অন্তঃসত্ত্বা প্রাণে বেঁচে যান। নিকটবর্তী করলপুরা হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। পরে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তিনি। স্ত্রী ও পুত্রকে সুস্থ অবস্থায় ফিরে পেয়ে প্রসূতির স্বামী কৃতজ্ঞতা জানান সেনা জওয়ানদের। প্রত্যেককে মিষ্টিও খাওয়ান তিনি।