#নয়াদিল্লি: স্যাটেলাইটে চেপে সুদূর মহাকাশে পাড়ি দেবে ভগবদ্গীতা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) নাম ও ছবি এবং প্রায় ২৫,০০০ মানুষের নাম। ইতিমধ্যেই জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সব ঠিক থাকলে ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল বেলায় শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে PSLV -C -51 (Polar Satellite Launch Vehicle) রকেটে চাপিয়ে মহাকাশে পাড়ি দেবে এই স্যাটেলাইট। নাম রাখা হয়েছে সতীশ ধাওয়ান স্যাটেলাইট বা SD SAT (Satish Dhawan Satellite/ SD SAT)। কিন্তু হঠাৎ করে গীতা, প্রধানমন্ত্রীর নাম ও ছবি পাঠানোর কারণ কী?
দেশের উদ্যোগপতিদের দ্বারাই দেশের মাটিতে তৈরি করা হয়েছে এই উপগ্রহ। এ বিষয়ে বিশদে ব্যাখ্যা করেছেন স্যাটেলাইটের প্রস্তুতকারক সংস্থা SpaceKidz India-এর ফাউন্ডার ও CEO ড. শ্রীমতী কেশন (Srimathy Kesan)। Hindustan Times-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, এই মিশনটিতে সিলমোহর পাওয়ার পর থেকেই নাম পাঠানোর বিষয়ে নতুন নতুন পরিকল্পনা করা হয়। মহাকাশে পাঠানোর জন্য সাধারণ মানুষের কাছে তাঁদের নাম জমা দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই প্রায় ২৫,০০০ নাম পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে দেশের বাইরে থেকেও ১,০০০ জনের নাম এসেছে। এমনকী, চেন্নাইয়ের একটি স্কুল তাদের প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেকের নাম পাঠিয়েছে। মানুষের এই আকর্ষণ ও কৌতূহল বজায় রাখার স্বার্থেই এই সমস্ত নাম মহাকাশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ এবার থেকে দেশের প্রতিটি মানুষ মহাকাশ অভিযানের অংশীদার হয়ে উঠবে।
স্যাটেলাইটে ভগবদ্গীতাও পাঠানো হচ্ছে। এর পিছনেও কারণ দেখিয়েছে স্যাটেলাইট প্রস্তুতকারী সংস্থা। অন্যান্য মহাকাশ অভিযান থেকেই এই ধারণা মাথায় এসেছে বলে জানাচ্ছেন শ্রীমতী কেশন। তিনি জানিয়েছেন, এর আগে মহাকাশ অভিযানে বাইবেল পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি অ্যাপোলো ১১ লুনার মডিউলে ( Apollo 11 Lunar Module) বাইবেল নিয়ে গিয়েছিলেন আমেরিকার মহাকাশচারী বাজ আলড্রিন (Buzz Aldrin)। পৃথিবীর বাইরে এভাবে কোনও ধর্মগ্রন্থকে প্রথমবার নিয়ে গিয়েছেন তিনি। সেই সূত্র ধরেই ভগবদ্গীতা পাঠানো হচ্ছে।
কেশনের কথায়, স্যাটেলাইটের টপ প্যানেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম ও ছবি রাখা হয়েছে। এর পিছনে রয়েছে আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের বার্তা এবং সেই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর একাধিক উদ্যোগ। সব চেয়ে বড় বিষয় হল, ইলেকট্রনিক্স থেকে শুরু করে সার্কিট সিস্টেম-সহ স্যাটেলাইটটির সমস্ত কিছু তৈরি হয়েছে দেশের মাটিতেই। তাই আত্মনির্ভর ভারতের কথা মাথায় রেখেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলির পাশাপাশি স্যাটেলাইটের বটম প্যানেলে ISRO-এর চেয়ারপার্সন ড. কে শিবন (K Sivan) ও সায়েন্টিফিক সেক্রেটারি ড. আর উমামহেশ্বরণের (R Umamaheswaran) নামও দেওয়া থাকবে।
উল্লেখ্য, স্যাটেলাইটটি ডেভেলপ করেছে SpaceKidz India। স্যাটেলাইটে তিনটি পে-লোড থাকছে। একটি পে-লোড স্পেস রেডিয়েশন অর্থাৎ মহাকাশের বিকিরণ দেখার জন্য, একটি ম্যাগনেটোস্ফেয়ার অর্থাৎ চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের পরিমাপ করার জন্য ও তৃতীয়টি লো পাওয়ার ওয়াইড এরিয়া কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক হিসেবে কাজ করবে।