#নয়াদিল্লি: প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে পঞ্জাব কংগ্রেসের গাঁটছড়া আর রইল না। অমরিন্দর সিং-এর উপদেষ্টা পদে তিনি আর থাকছেন না, একথা প্রশান্ত কিশোর প্রকাশ্যে জানাতেই রাজনৈতিক মহলে তুমুল গুঞ্জন। কেউ বলছেন, এবার প্রশান্ত কিশোর আর মন্ত্রগুপ্তির কাজ করবেন না। সরাসরি রাজনৈতিক নেতা হিসেবে এই রাজনীতির রণাঙ্গনে অবতীর্ণ হবেন। অন্য পক্ষের মত ২০২২ সালে পঞ্জাবে কংগ্রেসের ভাগ্যদয়ের সম্ভাবনা কম বুঝেই আগেভাগে পিছিয়ে আছেন প্রশান্ত কিশোর। এখানেই থামছে না কথা, কেউ কেউ দু পা এগিয়ে বলছেন শুধু পঞ্জাব কেন, আগামী দিনে উত্তরপ্রদেশ উত্তরাখান্ড গুজরাট অর্থাৎ এক কথায় বললে ২০২২-এর কোনও বিধানসভা নির্বাচনেই কংগ্রেসের স্ট্র্যাটেজিস্ট হিসেবে প্রশান্ত কিশোরকে পাওয়া যাবে না। এ হেন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এমনটা কি আগেভাগেই সোনিয়া গান্ধিকে দিন কয়েক আগে বৈঠকে জানিয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোর?
মিডিয়ায় চালু গালগপ্পকে সরিয়ে রেখে সেই বৈঠক সম্পর্কে বলতে হলে বলতে হবে, আসলে ভোট স্ট্র্যাটেজি নিয়ে প্রশান্ত কিশোর সোনিয়া গান্ধির কোনও কথাই হয়নি। বরং গান্ধি-ত্রয়ীকে প্রশান্ত কিশোর কংগ্রেসের সার্বিক খোলনলচে বদলে ফেলার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছিলেন। যার সঙ্গে সরাসরি ভোটের লড়াইয়ের সে অর্থে কোনও সম্পর্কই নেই। ১৩৬ বছরের পুরনো দলটি আজও বহু মানুষের হৃদয়ে রয়েছ। কিন্তু যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে তা ভরাট করতে, ভবিষ্যতে সময়ানুগ হয়ে উঠে কীভাবে দলকে ঢেলে সাজানো যায় সে ব্যাপারেই পরামর্শ দিয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোর।
কংগ্রেসের একটি সূত্রের খবর টিকিট বিতরণ, ভোট-জোট, চাঁদা তোলা এই ধরনের আভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছিলেন কিশোর । এমনকি এও মনে করা হচ্ছে, প্রশান্ত কিশোরের খসড়ায় সিলমোহর দিয়েছেন স্বয়ং তিন গান্ধি। এবং একে অ্যান্টনি, মল্লিকার্জুন খাড়্গে, অম্বিকা সোনির মতো নেতাদের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের পদক্ষেপ নিয়ে কথাও হয়েছে। এখান থেকেই দুয়ে দুয়ে চার করছেন অনেকে। অর্থাৎ তিন গান্ধির থেকে ফ্রি হ্যান্ড পেয়ে কংগ্রেসেই সরাসরি বড় দায়িত্ব নিয়ে নিতে পারেন প্রশান্ত কিশোর।
সারা দেশের জনপ্রিয় নেতাদের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের সম্পর্ক সুবিদিত। এম কে স্ট্যালিন, শরদ পাওয়ার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, উদ্ধব ঠাকরে অখিলেশ যাদব, হেমন্ত সোরেন জগনমোহন রেড্ডি-দের প্রত্যেকের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে প্রশান্ত কিশোরের। এর পাশাপাশি প্রশান্ত কিশোর মনে করেন কংগ্রেস ছড়া মোদি বিরোধিতা সম্ভব নয়। কারণ হিমাচল প্রদেশ, গুজরাট, উত্তরাখণ্ড, ছত্রিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, আসাম, হরিয়ানা প্রভৃতি রাজ্যে কংগ্রেসের এখনও ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে।
শেষ পাতে যে কথাটুকু পড়ে থাকে, আগামী ১০ অগাস্ট সোনিয়া গান্ধির দুই বছর পূর্তি হবে কংগ্রেসের' অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে। এর পরেই তার বিদেশ সফর রয়েছে। তাহলে কি প্রশান্ত কিশোরকেই সেই শূন্যস্থান ভরতে দেখা যাবে! কে না জানে রাজনীতিতে শূন্য চিরকাল থাকে না!
লেখক একজন সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক। মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Prashant Kishor, Sonia Gandhi