#নয়াদিল্লি: মঙ্গলবার রাতে দিল্লি এসেছেন বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। আর বুধবার সকাল থেকেই একের পর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করতে ছুটছেন তিনি। প্রথমেই তিনি দেখা করেছেন কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশীর সঙ্গে। পরে তিনি বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেল এর সঙ্গে। এদিনই তাঁর দেখা করার কথা রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গেও। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তিনি দেখা করতে পারেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে। স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যপাল এত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতিকে কী জানাবেন?
সূত্রের খবর, প্রথমত তিনি বাংলায় ভোট পরবর্তী অশান্তি এবং রাজনৈতিক হিংসা ও সেই হিংসায় বলি হওয়া মানুষদের কথা তুলে ধরবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির কাছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে সংশ্লিষ্ট দফতরের বিষয়ে রাজ্যের জন্য কিছু পরিকল্পনা প্রস্তাব পেশ করতে পারেন তিনি। রাজনৈতিক মহল মনে করছে রাজ্যপালের এই সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। দু'দিন আগেই রাজভবনে বিজেপি বিধায়কের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি দিল্লি ছুটে এসে দেখা করতে চাইছেন অমিত শাহর সঙ্গে। রাজ্যে হিংসা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। এর আগে কেন্দ্রীয় সরকারকে রিপোর্টও পাঠিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও একপ্রস্থ চিঠি লিখেছেন। সব মিলিয়ে রাজ্য ও রাজ্যপালের সম্পর্ক যে মধুর নয়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এই পরিস্থিতিতে জগদীপ ধনকড়ের দুদিন দিল্লি সফরকে মোটেই হালকা করে দেখছে না রাজনৈতিক মহল। দিন কয়েক আগে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একইভাবে দিল্লি সফরে এসে একের পর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ জানিয়েছেন। রাজ্যে অবিলম্বে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালুর ব্যাপারেও আর্জি জানিয়েছেন তিনি। শুভেন্দু অধিকারী প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে যাওয়ার পর রাজ্যে রাজ্যপালের সঙ্গে দলের বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক এবং এতকিছুর পর রাজ্যপালের দিল্লি সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
যদিও এই বিষয়ে রাজ্যপাল নিজে কিছু জানাতে চাননি।রাজ্যে বিরোধী দলগুলি বিশেষ করে বিজেপির পক্ষ থেকে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের অভিযোগ তোলা হচ্ছে। ভোট-পরবর্তী হিংসার মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে। সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয়েছে একটি ধর্ষণের মামলা। এরপর আলিপুরদুয়ারে এক মহিলার উপর অকথ্য নির্যাতনের ঘটনায় কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নোটিশ পাঠিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন। কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপারকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত হয়ে ঘটনার বিবরণ ও পদক্ষেপের বিষয়ে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্য রাজনীতিতে যখন এই বিষয়গুলি দানা বাঁধছে এবং অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের আবহ তৈরি হয়েছে, তখন আচমকা রাজ্যপালের দিল্লি সফরের দিকে নজর রয়েছে সব পক্ষের। তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন কোন রাজ্যের রাজ্যপাল দিল্লি সফরে এসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করতে তাদের বাড়িতে যাননি সচরাচর এমন ঘটনা দেখা যায় না। ধনখড় কেন যাচ্ছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।