#ERON ROY BURMAN
মাত্র২৪ ঘন্টার মধ্যে আশার আলো দেখল বিরাট কোহলির প্রিয় বিস্ময়বালকের পরিবার। নিউজ18 বাংলার খবরের জেরে রাজ্য ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লা বাড়িয়ে দিলেন সাহায্যের হাত। বেহালার মুচিপাড়াতে শেখ শাহিদের বাড়িতে পৌঁছে দিলেন চাল,ডাল, আলু সহ জরুরি সামগ্রী।
শনিবারই জানা যায়,লকডাউনের জেরে প্রায় অনাহারে কাটাতে হচ্ছে শেখ শাহিদ ও তার পরিবারকে। সেই খবর ভাইরাল হতেই পদক্ষেপ। এদিন লক্ষ্মীরতন শুক্লা প্রায় এক মাসের জরুরি সামগ্রী নিয়ে পৌঁছান বেহালার বাড়িতে। সমস্ত খাবার তুলে দেওয়া হয় শেখ শাহিদের পরিবারের হাতে।
নিউজ18 বাংলায় খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার সাহায্যের আশ্বাস দেন। প্রতিশ্রুতি দেন, এক ঘণ্টার মধ্যে তিনি সাহায্য করবেন। শেখ শাহিদের বাবা শেখ শামসেরকে ফোন করে দুশ্চিন্তা করতে না করেন। তারপরই হাওড়া থেকে সামগ্রী বেহালা পাঠিয়ে দেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা।
এই বিরাট বিপদের দিনে সাহায্য পেয়ে অভিভূত শেখ সাহিদের পরিবার। নিউজ বাংলার মাধ্যমে ফোনে লক্ষ্মীরতন শুক্লা কে ধন্যবাদ জানান শামসের। লক্ষ্মীরতন শুক্লা জানান, "নিউজ 18 বাংলাকে ধন্যবাদ এই প্রতিবেদন তুলে ধরার জন্য। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা অসহায় মানুষদের জন্য কাজ করছি। শেখ শাহিদ প্রতিশ্রুতিমান তরুণ প্রতিভা। ওর পরিবারের পাশে সবসময় আছি। আমি আমার সাধ্যমত সাহায্য করেছি। ভবিষ্যতে কোনও সাহায্য লাগলে তখনও পাশে দাঁড়াবো। রাজ্য সরকার সমস্ত মানুষের পাশে রয়েছে।"
নিউজ18 বাংলার টিভির পর্দায় ও ওয়েবসাইটে শেখ শাহিদের খবর তুলে ধরা হয়। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। সমস্ত কাজকর্ম বন্ধ। ফলে পেশায় সেলুন কর্মী শাহিদের বাবা শামসেরও কয়েক দিন ধরে কর্মহীন হয়ে পড়েন। দিন আনি দিন খাই পরিবারের দু'বেলা ভাত জোগাড় প্রতিরোধ করা অবস্থা শুরু হয়। রেশন কার্ড না থাকায় সমস্যা আরও বাড়ে। ধার করে সংসার টানতে শুরু করেন শামসের। তারপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্য চেয়ে আবেদন করেন শাহিদের বাবা। যোগাযোগ করেন নিউজ18 বাংলার প্রতিনিধির সঙ্গেও। তারপরই শাহিদের সমস্যা গণমাধ্যমে তুলে ধরা হয়।
শুধু লক্ষ্মীরতন শুক্লা নন। বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষও এই পরিবারকে সাহায্য করার জন্য উদ্যোগী হন। যোগাযোগ করেন শহীদের পরিবারের সঙ্গে। মাত্র একদিনের মধ্যে এইভাবে সাহায্য পেয়ে নিউজ18 বাংলাকেও ধন্যবাদ জানান শামসের। খেলাধুলো বন্ধ থাকায় বাড়িতেই এই মুহূর্তে অনুশীলন করছেন খুদে প্রতিভা।
গত বছর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায় ডাইপার পড়ে ডান হাতে নিখুঁত ব্যাটিং করছেন এক খুদে। তখন শাহিদের বয়স ছিল মাত্র আড়াই বছর। তখন থেকেই ব্যাট হাতে সাবলীল ওই খুদে। নিখুঁত স্ট্রেট ড্রাইভ, কভার ড্রাইভ, শ্যাডো প্র্যাকটিস। পড়াশোনায় হাতেখড়ি না হওয়া ছেলেটার ব্যাট হাতে হাতেখড়ি হয়ে গেছে ওই দু- আড়াই বছর বয়সেই। এই ভিডিও দেখে মুগ্ধ বিশ্বের তাবড় তাবড় ক্রিকেটাররা। প্রথমে মাইকেল ভন, ব্র্যাড হগরা নাম না জানা এই ছেলেটির ভিডিও নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ার পেজে আপলোড করেন। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার কেভিন পিটারসেন ইনস্টাগ্রামে ভিডিওটি আপলোড করে বিরাটের উদ্দেশ্যে লেখেন,এই ক্রিকেটার কে কোহলি দলে নেবেন কিনা। খুদের ব্যাটিং ভিডিওটি দেখে মুগ্ধ বিরাট জানতে চান ছেলেটা কোথাকার। তারপরই খোঁজ পরে ছেলেটির সম্বন্ধে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানা যায় ছেলেটি কলকাতার, তাও আবার প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বাড়ির থেকে কিছুটা দূরত্বেই থাকেন শেখ শাহিদ। বিবেকানন্দ পার্ক ক্রিকেট প্রশিক্ষণ নেন এই খুদে প্রতিভা।