#হায়দরাবাদ: করোনার ভাইরাস লকডাউনের মধ্যে, ১৯ বছর বয়সী ঐশ্বর্য রেড্ডি তার কলেজের ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার জন্য পরিবারের সঙ্গে একটি ল্যাপটপের ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন। এমনকি সেকেন্ডহ্যান্ড হলেও চলত, কিন্তু দরকার বলেছিলেন, তবে পরিবারের সদস্যরা যোগাড় করতে ব্যর্থ হয়েছিল। এতে দুঃখিত হয়ে গত সপ্তাহে দিল্লির লেডি শ্রী রাম কলেজের এক ছাত্রী তার নিজের শহর তেলঙ্গানায় আত্মহত্যা করে।
ঐশ্বর্যের ছেড়ে যাওয়া সুইসাইড নোটটি করোনার ভাইরাস বন্ধের সময় তার মতো হাজার হাজার পরিবার এবং শিক্ষার্থীদের আর্থিক যন্ত্রণার কথা বলেছে। ঐশ্বর্যের বাবা, একজন মোটরসাইকেল মেকানিক। তিনি বলেছেন যে, তিনি কোনওভাবে টাকার ব্যবস্থা করেছিলেন এবং মেয়ের পড়াশোনা শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। ঐশ্বর্য দ্বাদশ শ্রেণিতে ৯৮.৫ শতাংশ স্কোর করেছিল এবং পরিবার তার জন্য গর্বিত ছিল। তাঁর মা সুমতি রেড্ডি বলেছেন, 'আমার মেধাবী মেয়ে যেমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছিল, কারোর মেয়ে সঙ্গে যেন এমন না হয়'।
গণিত অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফেব্রুয়ারিতে স্কুল-কলেজ বন্ধ হওয়ার পরে বাড়ি ফিরে গিয়েছিল। অক্টোবরে, সে তার বাবাকে একটি ল্যাপটপের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিল, কারণ মোবাইল ফোনে অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ছিল তাঁর জন্য। বাবা জি শ্রীনীবাস তাঁর মেয়েকে কিছুদিন অপেক্ষা করতে বললেন। এরপর এই নিয়ে ঐশ্বর্য আর কোনও দিনও কোনও কথা বলেনি। গত মঙ্গলবার যখন পরিবারের সব সদস্যরা লিভিং রুমে জড়ো হয়ে ছিল তখন সে অন্য একটি ঘরে গিয়ে আত্মহত্যা করে।
সুমতি রেড্ডি বলেছেন যে, পরিবারের কেও বুঝতেই পারে নি যে ঐশ্বর্য এত চুপচাপ 'চলে যাবেন'। তিনি বলেছিলেন, 'আমাদের আর্থিক অবস্থার কারণে ও মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। পড়াশুনার জন্য সে দিল্লি যেতে চেয়েছিল, তার সব বন্ধুরা যেতে শুরু করে দিয়েছিল। আমরা তাঁকে পাঠানোর চেষ্টা করছিলাম কিন্তু অর্থের ব্যবস্থা করতে পারিনি। এমন পরিস্থিতিতে সে হতাশ হয়ে পড়ে।' ঐশ্বর্যের পরিবার জানিয়েছে যে মার্চ মাসে ১.২ লক্ষ টাকার স্কলারশিপ পাওয়ার কথা ছিল কিন্তু সেটা পেতে দেরি হয়েছিল। INSPIRE স্কলারশিপ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক থেকে দেওয়া হয়। শ্রীনিবাস রেড্ডি বলেছিলেন, 'তিনি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সে চিন্তিত ছিল যে' আমরা তাঁর পড়াশুনার খরচা ওঠাতে পাড়ব কিনা।'
তার কলেজের অ্যাডমিশনের জন্য তাঁর পরিবার তাঁদের একটি বেডরুমের বাড়ি বন্ধক রেখেছিল। করোনার ভাইরাসের কারণে লকডাউন হওয়ার পরে তার পরিবারের কাজ ভাল চলছিল না, এ কারণে সে চিন্তিত ছিল। তাঁর ছোট বোন বৈষ্ণবী স্কুলের পড়াশুনা ছেড়ে দিয়েছিল যাতে দিদি কলেজ যেতে পারে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।