#নয়াদিল্লি: ১৯২০ সালে জন্ম হয়েছিল তাঁর। স্বাভাবিক নিয়মেই শতায়ু এই বৃদ্ধার অভিজ্ঞতার কলসটি কানায় কানায় পূর্ণ। তাঁর জীবনের গল্প, সন্দেহ নেই, মুগ্ধ করার ক্ষমতা ধরে আমাদের সবাইকেই। জীবনের সে রকমই কিছু ঝলক সম্প্রতি সবার সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছেন তিনি।
আক্ষেপের বিষয়- যাঁর জীবনকাহিনিতে মজেছে তামাম দেশ, তাঁর নামটি কোথাও প্রকাশ করেনি মুম্বইয়ের সংগঠন হিউম্যানস অফ বম্বে। তারা তাদের ফেসবুক (Facebook) পেইজের মাধ্যমে আত্মকথনের মতো করে শুধু তুলে ধরেছে এই বৃদ্ধার জীবনের একটি সারসংক্ষেপ।
একেবারে শুরুতেই সবাইকে বৃদ্ধা জানিয়ে দিতে ভোলেননি যে তিনি মহাত্মা গান্ধীকে (Mahatma Gandhi) খুব কাছ থেকে দেখেছেন। জানা গিয়েছে যে তাঁর বাবা ছিলেন এক জেলের ডাক্তার। বাবা যখন গান্ধীজির স্বাস্থ্যপরীক্ষা করতে যেতেন, মাঝে মাঝে সঙ্গে নিয়ে যেতেন মেয়েকেও। এর পাশাপাশি তিনি জানাতে ভোলেননি যে অ্যাডলফ হিটলারের (Adolf Hitler) উত্থান এবং পতন- দুইয়েরই সাক্ষী থেকেছে তাঁর জীবন। তিনি বলেছেন আমাদের- এর চেয়েও খারাপ অতিমারী তিনি পেরিয়ে এসেছেন। কাজেই এই করোনার দুঃসময়ও যে কেটে যাবে, সে নিয়ে তাঁর কোনও সন্দেহ নেই।
https://www.facebook.com/humansofbombay/posts/1600995346776103
বৃদ্ধা মজা করে জানিয়েছেন যে তাঁর জীবন একটু হলেও সমস্যার মধ্যে পড়েছিল বিয়ের পরে। স্বামী ছিলেন পেশায় রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ার, মানে বছরে অন্তত তিনটে বদলি তো বাঁধাধরা ছিলই। এই সবের মাঝখানেই যখন দেশ স্বাধীন হল, তা যেন এক নতুন উদ্দীপনা নিয়ে এল তাঁদের জীবনেও। সেই রাতে তিনি আর তাঁর স্বামী জেগে ছিলেন, না ঘুমিয়ে সারা রাত তাঁরা দেখেছিলেন আতসবাজির বাহার আর স্বাধীনতার উদযাপন, জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি বলেছেন, সদ্য লাভ করা সেই স্বাধীনতার নেশা নিয়ে দেশের যেমন উন্নতিবৃদ্ধি হল, তেমনই বাড়ল তাঁর সংসারও। তিন সন্তানের গর্বিত জননী হলেন তিনি একে একে।
শতায়ু এই নারীর মতে, আনন্দলাভের মূল মন্ত্র লুকিয়ে রয়েছে বদলে যাওয়া পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার মধ্যে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন যে তাঁর স্বামী একটু হলেও রক্ষণশীল ছিলেন। কিন্তু তিনি সন্তানদের টিভি দেখা নিয়ে আপত্তি করেননি, বাইরে খাওয়াদাওয়া নিয়েও তাঁর কোনও সঙ্কোচ ছিল না। আজও তিনি সুযোগ হলেই পরিবারের সবার সঙ্গে পিৎজা খেতে যান, জানিয়েছেন সেটা। আবার বলতে ভোলেননি- মেজো ছেলের অন্য জাতে বিয়ে নিয়েও তাঁর কোনও আপত্তি ছিল না।
সম্প্রতি এই নারী পরিবারের সবার সঙ্গে পালন করেছেন শতবর্ষপূর্তির জন্মদিন। পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে উপহার হিসেবে আদায় করেছেন সারা মাসের চকোলেটের জোগান। আর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সবাইকে- ১০১ বছরের জন্মদিনে এর চেয়েও জাঁকজমক করে একটা পার্টি দেবেন। আনন্দ ছবির রাজেশ খান্নার (Rajesh Khanna) বলা সংলাপকে একটু বদলে নিয়ে জানিয়েছেন তিনি হিন্দিতে- আখির জিন্দগি বড়ি অউর লম্বি, দোনো হোনি চাহিয়ে!