#মুম্বই: ২০১৮ সালের ব্যাঘ্রসুমারির পরিসংখ্যান বলছে যে সেই সময়ে সারা দেশে বাঘের সংখ্যা ছিল মাত্র ২,৯৬৭টি। আর সেই বছরেই নভেম্বর মাসে মহারাষ্ট্রের বন দফতর হত্যা করে বাঘিনী অবনীকে। অভিযোগ ছিল, সে মানুষখেকো। খবর মিলেছিল যে খুব কম করে হলেও ১৩ জন মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়েছে অবনী। সেই সময়ে সুপ্রিম কোর্টও অবিলম্বে অবনীকে মেরে ফেলার রায় দিয়েছিল। মৃত্যুর পরে এবার অবনীর হত্যাকাণ্ড ফেরজায়গা করে নিল সুপ্রিম কোর্টের এজলাসে। সঙ্গীতা ডোগরের আবেদনে কান দিয়ে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবড়ে এবং বিচারক এ এস বোপন্না, ভি রামসুব্রহ্ম্যনের বেঞ্চ জানতে চাইল সত্যিই অবনী মানুষখেকো ছিল কি না!
সঙ্গীতা অভিযোগ করেছেন যে ২০১৮ সালে অবনীকে হত্যা করা হয়েছিল নির্মম ভাবে এবং সুপ্রিম কোর্ট আদতে যে রায় দিয়েছিল, তা অনুসরণ করা হয়নি। জানা যায় যে সুপ্রিম কোর্ট প্রথমে অবনীকে ট্রাঙ্কুলাইজার দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে বন্দী করার কথা বলেছিল। কিন্তু সেটা করা যায়নি বলেই হত্যার প্রসঙ্গ ওঠে। যদিও সঙ্গীতার বক্তব্য- অবনীকে শিকার করা হয়েছে যা ভারতের আইনবিরুদ্ধ।
সে ভাবে দেখলে সঙ্গীতার কথা একেবারে মিথ্যাও নয়। মহারাষ্ট্রের পান্ধারকাওড়া জঙ্গলের ওই বাঘিনীকে মেরে ফেলার জন্য রীতিমতো তোড়জোর চলেছিল। চারিদিকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বাঘিনীদের মূত্র। এছাড়াও কেলভিন ক্লেইনের বিশেষ একটি সুগন্ধিও ব্যবহার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। অর্থাৎ পরিস্থিতি মোতাবেকে অবনীকে হত্যার জন্য টোপ ফেলা হয়েছিল। বনদফতরের কর্মীদের সঙ্গে ছিলেন শিকারি আসগর আলি। তাঁর গুলিতে রালেগাঁওয়ের বোরাতি জঙ্গলের ১৪৯ নম্বর এলাকায় মারা যায় অবনী।
বলা হয়, আসগর নাকি প্রথমে ট্রাঙ্কুলাইজার দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন অবনীকে। কিন্তু তা কাজ করেনি। অবনী যখন তাঁকে থাবা মারতে উদ্যত হয়, তখন পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে তিনি গুলি করতে বাধ্য হন নিজের প্রাণরক্ষার জন্য। জানা যায়, সেই সময়ে তাঁরা ছিলেন একটি হুডখোলা জিপগাড়িতে। আর ঠিক এখানেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন সঙ্গীতা। তাঁর দাবি- বাঘিনীকে ধরাই যদি প্রাথমিক উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, তাহলে হুডখোলা জিপগাড়ি নিয়ে জঙ্গলের গভীরে কেন যাওয়া হয়েছিল? সেক্ষেত্রে তো মানুষের প্রাণের কোনও সুরক্ষাই থাকে না!
অবনীর জীবন আর ফিরে পাওয়া যাবে না! তবে সে সত্যিই মানুষখেকো ছিল কি না, তার প্রমাণ পাওয়াটা এখন দেশের পশুস্বার্থ সুরক্ষার দিক থেকে জরুরি তো বটেই!