#বেলাগাভি: সারা দেশে মাদক পাচার ও মাদক গ্রহণ নিয়ে এখন তোলপাড় চলছে। নেশার দ্রব্য হিসাবে গাঁজাও ভারতে নিষিদ্ধ। কিন্তু প্রশাসনের সামনেই দেশের কয়েকটি মন্দিরে প্রসাদ হিসাবে গাঁজা দেওয়া হয়, একথা বোধহয় অনেকেই জানেন না। উত্তর কর্ণাটকের বেশ কয়েকটি মন্দিরে রয়েছে এই প্রথা। অবধূত, শরণ, শপথ ঐতিহ্যের কেন্দ্রে আছে এই প্রসাদ হিসাবে গাঁজা দেওয়ার নিয়ম। এর মাধ্যমে মানুষ মোক্ষ লাভ করে বলে মনে করেন তাঁরা। ভারতের মতো দেশে এই প্রথা চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এখানে কিন্তু একেবারেই গাঁজা নিষিদ্ধ নয়।
ইয়দগির জেলার তিথিনি অঞ্চলে মৌনেশ্বরা মন্দিরে জানুয়ারি মাসের একটি উৎসবে হাজার হাজার মানুষ সাধারণত জড়ো হন। সেখানেই হাজির হওয়া সেই হাজার হাজার মানুষকে দেওয়া হয় এক প্যাকেট করে গাঁজা। ছোট্ট গাঁজার পুরিয়া খেয়ে তাঁরা ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেন। তাঁরা মনে করেন, এর মাধ্যমেই মোক্ষলাভ করা সম্ভব। গঙ্গাধর নায়েক নামে মন্দির কর্তৃপক্ষের এক সদস্য জানিয়েছেন, এখানে খোলাখুলি গাঁজা ব্যবহার করা হয়।
তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে এই গাঁজা প্রসাদ হিসাবে দেওয়ার প্রথা চলে আসছে। যে ভক্তরা এখানে আসেন, তাঁরা মনে করেন, গাঁজা পান করার মাধ্যমে তাঁরা এমন এক মার্গের দর্শন পাবেন, যে মার্গের দর্শন পাওয়া সাধারণভাবে সম্ভব নয়। মোক্ষলাভের উপায় এটি। সেই কারণেই এখানে গাঁজা বিতরণ করার প্রথম চলে আসছে। এবং বিপুল সংখ্যায় মানুষের মধ্যে প্রসাদ হিসাবে গাঁজা দেওয়া হয় মন্দির থেকে। এমনকী অনেকে বাইরে এই সময়ে গাঁজা বিক্রিও করেন, সেটিতে নিষেধাজ্ঞা থাকে না। যে কেউ এখানে এসে গাঁজা খেতে পারেন। কেউ কেউ আবার সেদ্ধ করে গাঁজা খান, কেউ আবার সিগারেটের তামাকের সঙ্গে খান।
এছাড়া, মহন্তেশ কে, যিনি শরণ প্রথার পথিক, তিনি ইয়াদগির ও রায়চুড়ের একাধিক মন্দিরে ঘুরেছে। রায়চুর জেলার আম্ভা মঠেও এই একই প্রথা দেখা যায়। তিনি জানিয়েছেন, সেখানকার ভক্তরা মনে করে এক অপার আনন্দের পথে যাওয়ার জন্য গাঁজা খাওয়া জরুরি। কেউ কেউ সপ্তাহে একবার এসে গাঁজা খান, কেউ দিনে একবার করে। যাঁরা আসেন, তাঁদের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন এমন নয়। সকলেই সুস্থ। তবে সকলেই মনে করেন, যে গাঁজা নেশার জন্য নয়, আসলে আনন্দ আর মোক্ষলাভের এক উপায় মাত্র। তাই প্রতিনিয়ত এটি পুজোর প্রসাদ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।