#ভোপাল: স্বামীর সঙ্গে একই চিতায় জ্বলছেন স্ত্রী৷ যেই আগুনকে সাক্ষী রেখে জন্ম জন্মান্তর একসঙ্গে কাটানোর প্রতিজ্ঞা করেছিলেন বিয়ের সময়, সেই প্রতিজ্ঞাই যেন পালন করলেন একসঙ্গে আগুনে পুড়ে৷ মধ্যেপ্রদেশের সিন্ধিতে বাস দুর্ঘটনায় একসঙ্গে জলে ডুবে মৃত্যু হয় স্বামী অজয় তাঁর স্ত্রীর৷ মাত্র ৮ মাস আগে বিয়ে হয় তাঁদের৷ তাঁদের বাড়ি সিন্ধির দেওরি গ্রামের ভুইমাদে৷ দম্পতির অকালমৃত্যুতে গ্রামবাসীদের চোখে জল৷ সকলেই শোকে পাথর৷ গ্রামজুড়েই যেন শূন্যতা৷
দুর্ঘটনার পর তাঁদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামে শোকের ছায়া দেখা দেয়৷ এরপর স্বামী ও স্ত্রীর নিথর দেহ আসতেই গ্রাম জুড়ে যেন হাহাকার পড়ে যায়৷ অনেকেই দম্পতির মরদেহ দেখতে যেতে চাননি৷ বিশেষ করে গ্রামের বয়োজ্যষ্ঠরা কোনওভাবেই মানতে পারেননি এই যুগলের মৃত্যু৷ তাই শ্মশানে তাদের দেহ নিয়ে যাওয়ার সময় অনেকে যেতে পারেননি৷ এতটাই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন তাঁরা৷
২৬ বছরের অজয় পানিখা৷ নিজে পেশায় একজন শিক্ষক, চেয়েছিলেন স্ত্রী তপস্যাও একই পেশায় আসুন৷ স্ত্রী তপস্যার বয়স ছিল ২১৷ সিন্ধিতে কমলা কলেজে পড়ছিলেন তিনি৷ দুইজনে সাতনায় পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কিছু কাগজপত্র আনতে যাচ্ছিলেন তাঁরা৷ ২০২০-র ২৮ জুন বিয়ে হয় তাঁদের৷
সিন্ধির বাস দুর্ঘটনায় ৫১টি দেহ উদ্ধার হয়েছে৷ এখনও বেশ কয়েকজনের খোঁজ নেই৷ চলছে উদ্ধারকাজ৷ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে৷ নিখোঁজ পরিবারের লোকজন ভিড় করেছেন এলাকায়৷ যাত্রী বোঝাই বাস জলে উল্টে পড়ে সিন্ধিতে৷ দুর্ঘটনাতে শোকপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ সাতনা থেকে সিধি জেলার দিকে আসছিল। পথে রামপুর নিয়াকিন অঞ্চলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। বাসটি চুইয়া ভ্যালি থেকে ঘুরিয়ে নেওয়ার কথা থাকলেও জ্যাম এড়াতে রুট বদলান চালক। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বানসাগর বাঁধের খালে পড়ে যায় বাসটি। ঘটনাস্থলে ক্রেন নিয়ে পৌঁছয় এসডিআরএফ-এর দল। বেশকয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালেও পাঠানো হয়। অলৌকিক ভাবে বেঁচে যান ওই বাসের চালক। এখনও পর্যন্ত ৫১ জনের মৃত্যুর হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷