#নয়াদিল্লি: ১০০টা ভালো কাজ কোনও ব্যক্তিকে ১০টা অপরাধ করার লাইসেন্স দেয় না৷ আদালত অবমাননা মামলায় বর্ষীয়ান আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণকে বৃহস্পতিবার বলল সুপ্রিম কোর্ট৷ এ দিকে প্রশান্ত ভূষণ আদালতকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, 'যে কোনও মূল্যের জরিমানা দিতে আমি রাজি আদালত অবমাননার অপরাধে৷'
এ দিন বিচারপতি অরুণ মিশ্র, বিআর গভাই ও কৃষ্ণ মুরারির বেঞ্চ প্রশান্ত ভূষণকে তাঁর বিবৃতি পুনর্বিবেচনা করার জন্য দু দিন সময় দেয়৷ কিন্তু ভূষণ জানিয়ে দেন, তিনি তাঁর বক্তব্যেই অনড় থাকছেন৷ বিতর্কিত সেই ট্যুইটে তিনি ক্ষমা চাইতে রাজি নন৷ ভূষণের আরও যুক্তি ছিল, আদালতের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করা তাঁর বাক স্বাধীনতার অধিকারের মধ্যে পড়ে এবং এটা বিচারব্যবস্থাকে বাধা দেওয়ার জন্য আদালত অবমাননার পর্যায়ে পড়ে না।
বিচারপতি অরুণ মিশ্র বলেন, 'আদালত অবমাননা গুরুতর অপরাধ৷ উনি যা করে ফেলেছেন, ফেলেছেন৷ কিন্তু আমরা চাই, একজন ব্যক্তির অনুশোচনা হোক৷' প্রশান্ত ভূষণের আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন, তাঁর মক্কেল সাধারণ মানুষের উপকারের জন্য বহু জনস্বার্থ মামলা করেছেন৷ একাধিক সমাজসেবাও করেন৷ প্রশান্তের আইনজীবীকে বিচারপতি বলেন, 'আপনি হয় তো ১০০টা ভাল কাজ করেছেন৷ তার মানে এই নয় আপনার ১০টা অপরাধ করার লাইসেন্স রয়েছে৷'
গত শুক্রবার প্রশান্তকে দোষী সাব্যস্ত করে বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বে বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারির তিন সদস্যের বেঞ্চ।
দেশের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের হার্লে ডেভিডসন বাইকে চড়ার ছবি নিয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ ট্যুইট করেছিলেন, 'এমন একটা সঙ্কটের সময়ে প্রধান বিচারপতি মাস্ক ও হেলমেট না পরে বাইকে চড়ছেন৷ অন্যদিকে লকডাউনে নাগরিকরা বিচার পাচ্ছেন না৷'
প্রশান্ত ভূষণ পরে আদালতে ক্ষমা চেয়ে জানান, তিনি খেয়াল করেননি বাইকটি স্ট্যান্ড করা আছে৷ কিন্তু আগের ৪ প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে কড়া ট্যুইটের জেরে তাঁর বিরুদ্ধে যে আদালত অবমাননার মামলা হয়েছিল, সেই মামলায় দুঃখ প্রকাশ তো দূর, ক্ষমাও চাননি প্রশান্ত ভূষণ৷
প্রশান্ত ভূষণ এ দিন সুপ্রিম কোর্টে অ্যাফইডেভিটে জানান, 'আমি সত্যিই লক্ষ্য করিনি, প্রধান বিচারপতি যে বাইকটিতে চড়েছিলেন, সেটি স্ট্যান্ড করা আছে৷ তাই হেলমেট পরার প্রয়োজন নেই৷ আমি ওই ট্যুইটটির জন্য ক্ষমা চাইছি৷ তবে আরেকটি যে ট্যুইট করেছি, তা সমর্থন করছি৷'
সাহারা-বিড়লা ডেয়ারি কেস থেকে শুরু করে বিচারপতি লোয়ার মৃত্যু, কোহিকো পুল আত্মহত্যা মামলা, মেডিক্যাল অ্যাডমিশন স্ক্যাম, অসম এনআরসি, সিএএ-সহ একাধিক মামলার প্রসঙ্গ তুলে প্রশান্ত ভূষণ সরাসরি বিচার ব্যবস্থার ফেলিওর আখ্যা দেন৷
প্রশান্ত ভূষণ একটি ট্যুইটে লেখেন, 'ভবিষ্যতে ইতিহাসবিদরা যখন বর্তমানের ৬ বছরের সময়সীমার দিকে তাকাবেন, তখন দেখবেন, ঘোষিত জরুরি অবস্থা না হলেও কী ভাবে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে৷ সুপ্রিম কোর্ট ও ৪ প্রধান বিচারপতির ভূমিকাও চিহ্নিত করতে পারবেন ইতিহাসবিদরা৷'
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Supreme Court